Header Ads

গ্রাম-বাংলাতে বাড়ছে বাংলা ক্যালেন্ডারের চাহিদা


বাংলা ভাষা দিন দিন নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদল বাঙালিই ভালোবাসছে না বাংলা ভাষাকে। আধুনিক হওয়ার দৌড়ে বহু বাঙালি আজকে বাংলা ভাষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বেশিরভাগ বাঙালিকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় বাংলা মাসের আজ কত তারিখ? বেশিরভাগ বাঙালিই সেখানে বলবে জানি না। ইংরেজি তারিখ বেশি ব্যবহারের জন্য এমনটা ঘটছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলা ক্যালেন্ডারের গুরুত্ব কমে যাওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলা ক্যালেন্ডারের ব্যবসাতে তুমুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে থাকেন প্রেস ব্যবসায়ীরা। 



বাংলা বছরের শেষে চিত্রটা বদলে গেছে। এ বছর সারা বাংলাতে এতো পরিমাণ বাংলা ক্যালেন্ডার তৈরির বরাত পড়েছে যে বাঙালি প্রেস ব্যবসায়ীরা ক্যালেন্ডার ছাপাতে একপ্রকার হিমশিম খাচ্ছেন। বাংলা ক্যালেন্ডারের ব্যবসা দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বাঙালির চিন্তাভাবনা একটু হলেও বদলাচ্ছে। বাংলা ক্যালেন্ডারের আকর্ষণীয় চাহিদার ফলে চাঙ্গা হচ্ছে বাংলার প্রেস ব্যবসা। 

বাংলা ক্যালেন্ডার সাধারণত পুজো-পার্বণের দিন, অন্নপ্রাশন, বিবাহ, আচার-অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ দেখার জন্য বেশি করে ব্যবহৃত হয়। তবে প্রত্যেক বাঙালি বাড়ির মা-ঠাকুমারা প্রতিদিনই বাংলা ক্যালেন্ডারে তারিখ দেখেন। তাছাড়া গ্রাম কিংবা শহর সমস্ত স্থানের বাঙালিদের ব্যবসার সারা বছরের আয়-ব্যয় হিসেব নিকেশ করা হয় বাংলা তারিখ অনুযায়ী। বাঙালিদের ব্যবসার ইয়ার এন্ডিং হয় মার্চ মাসে মানে বাংলা ক্যালেন্ডারের শেষ মাস চৈত্র। বাংলা ক্যালেন্ডারের গুরুত্ব যে একেবারেই বাঙালি হারাচ্ছিল তাও কিন্তু বলা যাবে না। বাংলা ক্যালেন্ডারের গুরুত্ব বাঙালিদের আজীবনই রয়েছে। তবে মাঝখানে কয়েক বছর যেন বাংলা ক্যালেন্ডারের গুরুত্ব কমতে বসেছিল।

১ লা বৈশাখ হালখাতার মাধ্যমে প্রতি বছর বাঙালিরা নতুন বছরের ব্যবসা নতুন করে আরম্ভ করে। এইদিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দোকানে হালখাতায় তাদের সহকর্মী ও খদ্দেরদের বাংলা ক্যালেন্ডার উপহার দেওয়া হয় মিষ্টির প্যাকেটের সাথে। মাঝখানে বাঙালির কেবল ইংরেজি ক্যালেন্ডার বানিয়ে সকলকে উপহার দেওয়ার চল শুরু হয়েছিল। বর্তমানে এই জায়গাতে আমূল পরিবর্তন ঘটছে।

আবারও বাংলা ক্যালেন্ডারের চল বাংলাতে বাড়তে শুরু করেছে। একজন বাঙালির কাছে এটা অনেক গর্বের। বাংলা ভাষা যদি না বাঁচে, বাংলা ভাষার নিদর্শনই যদি না বাঁচে তাহলে বাঙালিই বা বাঁচবে কী করে? বাংলা ভাষা থেকেই তো বাঙালি জাতির উৎপত্তি। লিটারেসি প্যারাডাইসের তরফে বহু প্রেস সংস্থার সঙ্গে কথা বলে আমরা এটাই জানতে পেরেছি যে বাংলা ক্যালেন্ডারের জন্য প্রেসগুলো এখন অন্য কোনো কাজে হাতে লাগাচ্ছেন না। কেউ প্রতিষ্ঠানের জন্য লিফলেট বা ব্যানার ছাপতে দিলে সেই কাজ তাদের ঝুলিয়ে রাখতে হচ্ছে। বাংলা ক্যালেন্ডার তৈরির জন্য তাদের রাতের ঘুম উড়ে যাচ্ছে। আর কটা দিন পরেই নববর্ষ, কাজেই অল্প সময়ে অনেক বেশি চাপ তাদের বহন করতে হচ্ছে। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments