বাঙালি বিজ্ঞানীর তৈরি বিশেষ 'বায়ো কংক্রিট' নিমেষে সারাবে বাড়ির ফাটল
কল্পবিজ্ঞানের কল্পনা যদি বাস্তবে রূপান্তরিত হয় তাহলে তা সত্যিই অবিস্মরণীয় হয়ে ওঠে। বিশ্বের বহু সিনেমাতে আমরা দেখেছি একজন মানুষ কোনো এক যাদুবলে নিজের শরীরের ক্ষত আপনা-আপনি সারিয়ে নিচ্ছে। আবার কোনো একটা কাচের দেওয়ালে ফাটল ধরার পর তা নিজে থেকে জোড়া লেগে যাচ্ছে। এ সবকিছুর প্রতিফলন এবার বাস্তবে, বাঙালি বিজ্ঞানী মানস সরকারের তৈরি বায়ো কংক্রিট বিজ্ঞান জগতে নতুন সংযোজন।
বিজ্ঞানী মানস সরকারের তৈরি বায়ো কংক্রিট ঘর-বাড়ির ফাটল নিজে থেকে সারিয়ে দিচ্ছে। বিশ্ববিখ্যাত গবেষণা সংস্থা এলসেভিয়ারের অধীন সায়েন্স ডিরেক্টরের জার্নাল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ প্রকাশিত মানস সরকারের কর্মকাণ্ড বিজ্ঞান জগতে বিপ্লব নামিয়ে আনবে। এই বিশেষ বায়ো কংক্রিটে আছে একপ্রকার ব্যাকটেরিয়া। যারা এই কংক্রিট থেকেই নিজেদের খাবার সংগ্রহ করে ও উপজাত দ্রব্য হিসেবে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট তৈরি করে। এই ব্যাকটেরিয়ার খাদ্য হিসেবে থাকে ক্যালসিয়াম ল্যাকটেট। তা থেকে বায়োমিনারালাইজেশনের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়াটি চুনাপাথর বা ক্যালসিয়াম কার্বনেট তৈরি করে।
গবেষণাতে দেখা গেছে, ব্যাকটেরিয়াটি মাত্র ২৮ দিনে দেওয়ালে ৬০ থেকে ১০০ শতাংশ ফাটলই পূরণ করতে পারে। যার মধ্যে ০.২ মিলিমিটার থেকে ২ মিলিমিটার প্রস্থের ফাটলগুলি ২৮ দিনে ৬০ শতাংশ পূরণ হয়ে যায়৷ আর ২০ থেকে ২০০ ন্যানোমিটারের ফাটলগুলি ২৮ দিনে ৮৭ শতাংশ পূরণ হয়ে যায়।
ফ্লাই অ্যাশ, ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইড সহ বিভিন্ন শিল্পবর্জ্য দিয়ে তৈরি এই কংক্রিট। জানা যাচ্ছে, এই বিশেষ কংক্রিট নাকি কার্বনডাইঅক্সাইড শোষণ করতেও সক্ষম। বর্তমানে ১ টন সিমেন্ট উৎপাদন করতে গিয়ে ০.৮ টন কার্বনডাইঅক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়। এই কংক্রিটকে পরিবেশ বান্ধব কংক্রিটও বলা যাবে। চিনের ঝেঝিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় ও ডেনমার্কের আরহস বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কাজ করছেন মানস সরকার। তাঁর গবেষণা সংস্থাকে স্বীকৃতি দিয়েছে চীনের হাইড্রোকার্বন সংস্থা।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment