বিশ্বের দীর্ঘতম নদীবক্ষে সাঁতার প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন প্রত্যয় ভট্টাচার্য
সাঁতারের সাথে বাঙালির সম্পর্ক আদিম যুগ থেকেই। পক প্রণালী থেকে ইংলিশ চ্যানেল, পানামা খাল, দার্দেনালিশ, জিব্রাল্টার, সুয়েজ খাল এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে বাঙালি সাঁতার কাটেনি। পৃথিবীর দ্রুততম সাঁতারুর খ্যাতি পেয়েছিলেন মিহির সেন। বুলা চৌধুরী, শচীন নাগ, আরতি সাহা, মাসুদুর রহমান বৈদ্য, ব্রজেন দাসের মতো একের পর এক বাঙালি বাংলার সাঁতারকে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান দিয়েছেন।
এরকমই একটি গর্বের বিষয় যা আমাদের অনেক বাঙালিরাই জানিনা। বিশ্বের দীর্ঘতম নদীবক্ষে সাঁতার প্রতিযোগিতা হয় আমাদের বাংলার মাটিতেই। মুর্শিদাবাদে ভাগীরথী নদীর ওপর হয় ৮১ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতা যা বাংলার গর্ব। ওপার বাংলাতেও মেঘনা নদীতে ৩৩ মাইলের সাঁতার প্রতিযোগিতা হয়। যেহেতু মেঘনা নদীর গড় গভীরতা প্রায় ১১০০ ফুট তাই ভয়ংকরতার বিচারে সেটিকেও কম বলা যায়না।
প্রতি বছর মুর্শিদাবাদ সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ৮১ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। গতকাল রবিবার অর্থাৎ ৩রা সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় এই সাঁতার প্রতিযোগিতা। এতে অংশগ্রহণ করেন দেশ বিদেশের ৫ জন মহিলা সহ ২২ জন সাঁতারু। থাইল্যান্ড, স্পেন, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়ার মতো দেশ থেকেও এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন সাঁতারুগণ। এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হন বাঙালি সাঁতারু প্রত্যয় ভট্টাচার্য, তিনি ১০ ঘন্টা ৩৩ মিনিটে ওনার সাঁতার শেষ করেন। দ্বিতীয় হন স্পেনের ড্যানিয়েল পন্স জিমেনেজ, তিনি সাঁতার শেষ করেন ১০ ঘন্টা ৪৮ মিনিটে।
এতবড় সাঁতার প্রতিযোগিতা বাংলার মুখ উজ্জ্বল করছে। দেশ বিদেশের মিডিয়াতেও বেরিয়েছে এর খবর। তবুও দুর্ভাগ্যের বিষয় বাঙালিরাই এ খবর অনেকে জানেন না। আমাদের বাঙালির আত্মপরিচয় ও আত্মমর্যাদা বাড়ানোর আরো প্রয়োজন আছে। আমরা আমাদের জাতির প্রচারে কোনো ভূমিকা রাখছি না। প্রচারবিমুখতা একটি জাতির হীনমন্যতা তৈরি করে। আমরাও সেই জিনিসটাই হয়তো করে চলেছি। বাঙালির জাত্যাভিমান প্রয়োজন। আশা করা যায় তা আবারো বাঙালির ফিরবে।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment