এবার জি.আই পেতে চলেছে মেচা সন্দেশ ও কনকচূড় ধান সহ বাংলার একাধিক পণ্য
কোনো একটি পণ্যের অর্থনৈতিক মূল্য বহুগুণ বেড়ে যায় যদি সেই পণ্যে জিআই থাকে। কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় কোনো একটি পণ্য অধিক বিস্তার লাভ করলে সেই পণ্যের ওপর জিআই ট্যাগ লাগানো হয়। জি.আই মানে জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন যার বাংলা অর্থ হলো ভৌগোলিক স্বীকৃতি। এটি একটি স্বাক্ষর বিশেষ। কোনো প্রোডাক্টের সঠিক ভৌগোলিক মর্যাদা দিতে ব্যবহার করা হয় এই স্বাক্ষর। একটি প্রোডাক্ট যে অঞ্চলে প্রথম উৎপাদিত হয়৷ সেই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশে জিআই বিশেষ ভাবে সহায়তা করে।
বাংলার যেসব পণ্যে জিআই আছে তা হলো দার্জিলিং চা, নকশি কাঁথা, শান্তিনিকেতনী চর্মজাত সামগ্রী, তুলাইপাঞ্জি চাল, গোবিন্দভোগ চাল, লক্ষ্মণভোগ আম, ফজলি আম, হিমসাগর আম, শান্তিপুরী শাড়ি, বালুচরী শাড়ি, ধনেখালি শাড়ি, পটচিত্র, সীতাভোগ, মিহিদানা, রসগোল্লা, জয়নগরের মোয়া, মাদুরকাঠি, ছৌ মুখোশ, কুশমান্ডির কাঠের মুখোশ, ডোকরা, মনসা চালি, পাঁচমুড়ার টেরাকোটা ও ডলে খুর্সানি লঙ্কা। এবার সেই তালিকায় নতুন কয়েকটি বাংলার পণ্যের সংযোজন হতে চলেছে।
জানা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি পণ্যের জি.আই এর জন্য আবেদন জানিয়েছে রাজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর। জি.আই রেজিস্ট্রিতে সেই পণ্যগুলির আবেদন গৃহীতও হয়েছে। আগামীদিনে আরো বেশ কয়েকটি পণ্যকে জি.আই স্বীকৃতির জন্য পাঠানো হবে। এই পণ্যগুলো জি.আই স্বীকৃতি পেলে বাংলার অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসবে।
জিআই এর জন্য যে পণ্যগুলির কথা বলা হয়েছে তা হলো- নতুন গুড়ের সন্দেশ, কনকচূড় ধান, কামারপুকুরের সাদা বোঁদে, মুর্শিদাবাদের খাগড়ার কাঁসার বাসন ও অন্যান্য সামগ্রী, বিষ্ণুপুরের দশাবতার তাস, বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ, শোলার কারুকাজ, বাঁকুড়ার শাঁখের কাজ এবং শান্তিনিকেতনের আল্পনা।
জি.আই পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যে পণ্যটির আদৌ সেই অঞ্চলে জন্ম হয়েছে কিনা। এর জন্য গবেষণা করে সঠিক ও উপযুক্ত প্রামাণ্য নথিপত্র জমা দিতে হয়। রাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর এই কাজটিও সম্পূর্ণ করে ফেলেছেন। এখন দেখা যাক বাংলার ভাগ্যে আর কোন কোন পণ্যে জি.আই ট্যাগ লাগতে চলেছে।
শুধু এই পণ্যগুলোই নয়, জি.আই পাওয়ার দৌড়ে ইতিমধ্যেই এগিয়ে রয়েছে কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্য সরভাজা ও সরপুরিয়া। মালদা শহরের মিষ্টি ব্যবসায়ীরা রসকদম্বের জি.আই স্বীকৃতির জন্য লড়াই করছেন। দুই মেদিনীপুরের মানুষ গয়না বড়ির জি.আই স্বীকৃতির জন্য লড়াই করছেন।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment