Header Ads

জারোয়ার দেশে থিম হয়ে ফুটে উঠলো আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসবে


আন্দামানের এক অতি প্রাচীন উপজাতি হলো জারোয়া। এরা প্রধানত যাযাবার উপজাতি। আনুমানিক ২০০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন উপজাতি হলো জারোয়া। অধিকাংশ নৃতত্ত্ববিদদের মতে, জারোয়ারা বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায় জঙ্গিল উপজাতির উত্তরসূরী। ভাষা ও সংস্কৃতির দিক থেকে জারোয়ারা গ্রেটার আন্দামানীদের থেকে স্বতন্ত্র। আবার অনেক নৃতত্ত্ববিদ এও মনে করেন যে, জারোয়া উপজাতি গোষ্ঠীর সঙ্গে আফ্রিকান উপজাতি গোষ্ঠীর নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে। জারোয়ারা একপ্রকার নেগ্রিটো উপজাতি৷ প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস "সবুজ দ্বীপের রাজা"- তেও জারোয়া উপজাতির উল্লেখ আছে। 


এই জারোয়া উপজাতিদের জীবনযাত্রা এবার ফুটে উঠলো আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসবে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যতম দুর্গাপুজোর মধ্যে একটি হলো আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসব। গুটি গুটি পায়ে ৩৬ তম বর্ষে পা রাখলো এই পুজো৷ বিগত কয়েক বছর ধরে জেলার মানুষের মন জয় করে নিচ্ছে এই পুজো কমিটি। গর্বের বিষয় হলো থিমের জোয়ারে এখানকার পুজো টেক্কা দিচ্ছে মেদিনীপুর ও খড়্গপুরের মতো শহরের পুজোকেও।

বিভিন্ন পরিবেশ বান্ধব উপাদান দিয়ে তৈরি হয়েছে সম্পূর্ণ মণ্ডপ। হোগলা, কাশ, কড়ি, তুলো, বেলের খোল, তুস ও আরো নানান বস্তুর সমন্বয়ে অনন্য রূপ পেয়েছে মণ্ডপটি। স্বনামধন্য থিম শিল্পী প্রফেসর সুতনু মাইতির ভাবনায় শিল্পী চন্দন পৈড়া ও তাঁর দল মিলে নির্মাণ করেছে মণ্ডপ। মূল থিমের আঙিনায় বানানো হয়েছে প্রতিমাও। কাঁথির বিশিষ্ট মৃৎশিল্পী জয়দেব বর নির্মাণ করেছেন প্রতিমা। তিনি বরাবরই অসাধারণ সব প্রতিমা নির্মাণ করে থাকেন। তাঁর হাতে গড়া প্রতিমাতে থাকে অভিনবত্বের ছোঁয়া।

আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসবের পুজোর এ বছরের মণ্ডপের সামনে দাঁড়ালে আপনার মনে হবে যেন আপনি সত্যি সত্যিই বঙ্গোপসাগরের কোলে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন জারোয়া উপজাতিদের দেশে ভ্রমণ করছেন। মণ্ডপের পরতে পরতে তুলে ধরা হয়েছে তাদের জীবনযাত্রার জ্বলন্ত প্রতিচ্ছবি। মণ্ডপে প্রবেশ করলে আপনি দেখতে পাবেন আন্দামানের গহীণ অরণ্যে কীভাবে জারোয়ারা বসবাস করে, কীভাবে শিকার করে তারা খাদ্য সংগ্রহ করে, কীভাবে তারা সময় কাটায়, তাদের থাকার জায়গাগুলো ঠিক কেমন৷

মণ্ডপটি দিনের বেলায় এক রূপে এবং রাতের বেলায় আরেক রূপে দেখা যাবে। রাত্রিবেলায় মণ্ডপের মধ্যে চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা মুগ্ধ করবে আট থেকে আশি৷ 

প্রতিবেদন- সুমিত দে

 

No comments