Header Ads

পাঁচ হাজার বট-অশ্বত্থ রোপণের লক্ষ্যে সবুজ অভিযান করছেন কাঁথির এক শিক্ষক


"প্রতিটি দিন হোক অরণ্য দিবস"- এই বার্তাকে ছড়িয়ে দিতে লড়াই করছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি ১ ব্লকের ছত্রধরা গ্রামের বাসিন্দা শ্যামল জানা। যিনি পেশায় একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁর জীবনের স্বপ্ন ৫০০০ বট ও অশ্বত্থ বৃক্ষরোপণ। যে স্বপ্নকে সত্যি করতে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভিক্ষা করে হোক বা চুরি করে ৫০০০ বট/অশ্বত্থ বৃক্ষ তাঁকে যে করেই হোক লাগাতেই হবে। 


বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ঘটনা তাঁকে নাড়া দিচ্ছে। সবুজ পৃথিবীকে বাঁচাতে তিনি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বট ও অশ্বত্থ বৃক্ষ রোপণ করছেন৷ ইতিমধ্যেই তিনি লাগিয়ে ফেলেছেন ৫৯৫ টি বট/ অশ্বত্থ বৃক্ষ। বাংলার এমন কোনো জেলা নেই যেখানে তিনি বট/ অশ্বত্থ বৃক্ষ লাগাননি। 

২০২১ সালের ২৫ শে আগস্ট কাঁথি শহরে প্রথম বটচারা রোপণ করেন তিনি। তেইশতম ও শেষ জেলা মুর্শিদাবাদের বেলাডাঙায় চারা রোপণের মধ্য দিয়ে সব জেলায় বট/ অশ্বত্থ বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচীর সমাপ্ত হয়। তাঁর এই বট/ অশ্বত্থ গাছ লাগানোর সবুজ অভিযানের ট্যাগলাইন হলো "থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে বৃক্ষরোপণ বিশ্বজুড়ে"। তাঁর কথায়, "বৃক্ষ  হলো দেবতা। সারা পৃথিবী আমার বাগান৷ লোকে বলে মরার আগে কিছু দাগ রেখে যা। আমি বলি মরার আগে কিছু গাছ রেখে যা।" 

নিজের স্বপ্নকে সত্যি করতে অভিনব উপায়ে বট-অশ্বত্থ রোপণ করছেন তিনি। যেমন কয়েকদিন আগে শ্যামলবাবু তাঁর বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে ৩০ টি বট-অশ্বত্থের চারা রোপণ করেন। এছাড়াও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে দীঘা, শঙ্করপুর, মন্দারমণির সৈকতে শতাধিক বট/ অশ্বত্থ বৃক্ষরোপণ করেছেন তিনি। কলকাতার ব্রিগেড গ্রাউন্ড এবং ইডেনের পাশেও তিনি বটবৃক্ষ রোপণ করেছেন। তাঁর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও বট/ অশ্বত্থ বৃক্ষ রোপণের নেশা ছড়িয়ে দিতে মাঝেমধ্যে গাছ নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের দুয়ারে পৌঁছে যান তিনি। এমনকি পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে গ্রিণ কারে চড়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়ান তিনি৷ 

বছর আটত্রিশের শ্যামল জানা বড় হয়েছেন এক ব্যবসায়ী পরিবারে। বহু আগেই তিনি হারিয়েছেন নিজের বাবা-মাকে। তাঁর দাদারা সব আলাদা থাকেন। মাত্র বছর তিনেক আগেই তিনি বিয়ে করেছেন৷ তাঁর স্ত্রী মনিকাও এখন তাঁর সঙ্গে বট/ অশ্বত্থের চারা খুঁজে থাকেন। নিজের স্বামীর স্বপ্নকে সত্যি করতে তিনি বদ্ধপরিকর৷ বট/ অশ্বত্থ লাগানোর সবুজ অভিযান করতে গিয়ে নানান প্রতিকূলতারও মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। বর্তমানে শ্যামলবাবুর সচেতনতার বার্তা দেখে বহু মানুষ বট বৃক্ষরোপণ করছেন। তাঁকে বৃক্ষও উপহার দিচ্ছেন। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments