ইংল্যান্ডের ডারহাম কাউন্টির বার্নার্ড ক্যাসেলের প্রথম বাঙালি মেয়র রিমা চট্টোপাধ্যায়
উত্তর ইংল্যান্ডের ডারহাম কাউন্টির ছোট্ট শহর বানার্ড ক্যাসেল। যে শহরের আনাচে-কানাচে লেগে আছে প্রাচীনত্বের ছোঁয়া। এটি ইংল্যান্ডের এক ঐতিহাসিক শহরও বটে। এখানে কিছুটা বাঙালিয়ানারাও ছাপ রয়েছে। বার্নার্ড ক্যাসেলের বিভিন্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্টে কষা মাংস, রসগোল্লা এবং ফুচকা পাওয়া যায়৷ এই শহরে গেলে আপনি খুঁজে পেতে পারেন এক টুকরো কলকাতাকে। এসবই সম্ভব হয়েছে এক বঙ্গতনয়ার জন্যই। বাংলার মেয়ে রিমা চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে এই ছোট্ট শহরটির মেয়র। প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঙালি হিসেবে বার্নার্ড ক্যাসেলের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
রিমা চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম কলকাতা শহরে। তিনি কলকাতার লরেটো হাউজ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাস করার পর হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার জন্য গোয়া যান৷ তারপর তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্বামীর সঙ্গে ইংল্যান্ডে চলে যান। সেই থেকেই প্রবাস বসবাস করছেন তিনি। আর বর্তমানে তিনি বার্নার্ড ক্যাসেলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছেন।
রিমা চট্টোপাধ্যায় তাঁর স্বামী রয়ের সঙ্গে লাগোস, ইথিওপিয়া ও ব্রিটেনের একাধিক জায়গায় রেস্তোরাঁর ব্যবসা করেছেন। সেই সূত্রে বছর দশেক আগে উত্তর ইংল্যান্ডের ডারহাম কাউন্টির বার্নার্ড ক্যাসেলে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু তাঁরা। একটি পরিত্যক্ত সরাইখানা কিনে সেটিকে তাঁরা রেস্তোরাঁয় পরিণত করেছিলেন। এই রেস্তোরাঁটির মাধ্যমেই তিনি বেশ কিছু বাঙালি পদ যেমন মাছ ভাজা, কষা মাংসকে ইংল্যান্ডে জনপ্রিয় করে তুলেছেন।
হঠাৎ করেই তিনি একদিন ইংল্যান্ডের রাজনীতিতে নিজের নাম লেখান। সাফল্যের সঙ্গে প্রবাসে তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু হয়। দু'দুবার বার্নার্ড ক্যাসেলের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। কাউন্সিলর পদে বসার পর তিনি এমন কিছু কর্মকাণ্ড করেন যা এই শহরের আমূল পরিবর্তন আনে। তাঁর মহান কর্মকাণ্ড এবং বিপুল জনসমর্থন তাঁকে ডারহাম কাউন্টির বার্নার্ড ক্যাসেলের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছে। এই বিশাল দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মেয়রের কাজ তিনি মন দিয়ে পরিচালনা করছেন।
এতো বছর ইংল্যান্ডে থাকলেও তিনি ভুলতে পারেননি তিলোত্তমা কলকাতার কথা। মাঝে মধ্যেই তিনি কলকাতাকে স্মৃতিচারণ করে থাকেন৷ কষা মাংস, ঘি দিয়ে মাখা গরম ভাত খুব মিস করেন তিনি। স্কুলগেটের বাইরে ঝাল চিপস আর বরফ গোলা এখনও টানে তাঁকে। সহজ কথায় বলতে গেলে কলকাতার সবকিছুই খুব মনে পড়ে তাঁর৷
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment