যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে ৩০০ জন শিক্ষার্থীকে নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে লড়াই করছেন এক বাঙালি
তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আরেকটি যুদ্ধ লড়ছেন। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের মাটিতে এখনও দাঁতে দাঁত কামড়ে লড়ে যাচ্ছেন পৃথ্বীরাজ ঘোষ নামের এক বাঙালি চিকিৎসক। যিনি বলেন, "এত বছর এখানে আছি। এখন চলে যাওয়া ভালো হবে না। আপাতত কিছু দায়িত্ব আছে। তাদের বাদ দেওয়া উচিত নয়"। পৃথ্বীরাজ ঘোষের বাবা-মা তাঁদের ছেলের কাজের জন্য গর্বিত। কিন্তু কলকাতায় বসে পৃথ্বীরাজ ঘোষের মা-বাবার উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে।পৃথ্বীরাজ ঘোষ ঠিক কী করলেন? তিনি যে কাজটি করেছেন তার জন্য বিশ্বের কাছে বাঙালির মাথা উঁচু হলো।
চতুর্দিকে গুলির শব্দ আর বাতাসে বারুদের গন্ধ। নিজেদের জীবন বাঁচাতে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা হোস্টেল ছেড়ে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছে। যেখানে জল নেই, খাবার নেই। এমনকি বাঙ্কারে অক্সিজেনের সরবরাহও আস্তে আস্তে কমছে। এরূপ ভয়াবহ অবস্থার মাঝেও প্রাণপণে লড়ছেন পৃথ্বীরাজ ঘোষ। এই অস্থির সময়েও বাড়ি ফেরার কথা ভাবছেন না তিনি। প্রায় বছর পনেরো হলো তিনি ইউক্রেনে বসবাস করছেন। তিনি ভারত সহ বিভিন্ন দেশের ৩০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে নিরাপদ স্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন।
পৃথ্বীরাজ বাবুর বৃদ্ধ বাবা প্রদীপ ঘোষ এবং মা ব্রততী ঘোষ কলকাতার হিন্দুস্তান পার্কে থাকেন। তাঁরা দুজনেই তাঁদের সন্তানের সাহসিকতা দেখে মুগ্ধ। তবুও তাঁদের চোখে-মুখে দুশ্চিন্তা ও ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। পৃথ্বীরাজ বাবুর মা ব্রততী ঘোষ বলেন, "আমাদের ছেলে খুব ভালো কাজ করছে। কিন্তু আমিও চাই ছেলেটা আমার কাছে ফিরে আসুক। আমার অবস্থা খুব খারাপ। সে শুধু আমাদের বলেছে, তোমরা একদম উত্তেজিত হবে না, তোমরা যদি উত্তেজিত হও তাহলে আমার খারাপ লাগবে। তাই আমি নীরব।"
পৃথ্বীরাজ ঘোষ রাতদিন খাওয়া-দাওয়া ভুলে ইউক্রেনের জখম মানুষদের নিঃস্বার্থভাবে চিকিৎসা করছেন। এভাবেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন এক বাঙালিও। তিনি এক সংবাদমাধ্যমকে জানান, "কিয়েভের সমস্ত শিক্ষার্থীরা চলে গেছে। যেসব শিক্ষার্থীরা এখনও আটকে রয়েছে তাদের সাহায্য করেই আমি হয়তো ফিরবো।"
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment