Header Ads

ব্রাজিলে আয়োজিত মুক-বধিরদের ডিফলিম্পিক্সে অংশ নেবে বাংলার মেয়ে অভিষা ব্যানার্জী


প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বারংবার শিকার হতে হয় সামাজিক বৈষম্যের। বেশিরভাগ মানুষকে দেখা যায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমাজ থেকে দূরে ঠেলে দিতে। কিন্তু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসার আপ্রাণ লড়াই করে চলে। আজকাল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে বহু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিই সফল হচ্ছেন। হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা অভিষা ব্যানার্জীর লড়াই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসার দিশা দেখাচ্ছে। ১৮ বছর বয়সী অভিষা ব্যানার্জী সমস্ত প্রতিকূলতাকে হারিয়ে  কিছুদিনের মধ্যেই পাড়ি জমাবে ব্রাজিলে ডিফঅলিম্পিক্সে টেবিল টেনিস খেলার জন্য। 


অভিষা ব্যানার্জী জন্মসূত্র থেকেই মুক-বধির। কানে শুনতে না পাওয়া ও কথা বলতে না পারার যন্ত্রণায় আজও দিন কাটছে তার। তবুও একটু একটু করে সে নিজের পরিচয় গড়ে তুলছে। ব্রাজিলে আর কয়েকদিনের মধ্যেই আয়োজিত হবে মুক-বধিরদের জন্য ডিফলিম্পিক্স। এই প্রতিযোগিতায় সে দেশের হয়ে টেবিল টেনিসে নির্বাচিত হয়েছে। 

ছোটো থেকেই খেলাধূলার প্রতি প্রবল আগ্রহ অভিষার। মাত্র তিন বছর বয়সেই সে জিমন্যাস্টিকে প্রশিক্ষণ নেয়। যদিও খুব বেশিদিন সেই খেলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভবপর হয়নি। এরপরই উত্তরপাড়া মহুয়া ক্লাব থেকে আরম্ভ হলো তার টেবিল টেনিস প্রশিক্ষণ। কয়েক বছর সেখানে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর অভিষা ভর্তি হয় হিন্দমোটরের বিবেকানন্দ ক্লাবে। এই ক্লাবের প্রতিনিধি হিসেবে মাত্র ১৩ বছর বয়সে জাতীয় মুক-বধির টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জয় করে অভিষা। ২০১৯ সালের জাতীয় প্রতিযোগিতায় সোনা ও রুপো মিলিয়ে মোট ৪টি পদক জিতে নেয় সে। ২০১৯ সালে পদকের সংখ্যায় সেটিই ছিল রেকর্ড। 

একবুক স্বপ্ন নিয়ে টেবিল টেনিস খেলে অভিষা। নিজেকে কখনো সে চার দেওয়ালে আটকে রাখতে চায়নি। সমাজের সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের মতোই জীবনধারণ করতে চায় সে। বাংলার ক্রীড়া জগতের একজন প্রতিভাবান মেয়ে হিসেবে নজির তৈরি করতে বদ্ধপরিকর অভিষা। হার কাকে বলে সে জানেনা। ছোট থেকেই কোনোকিছুতে হেরে যেতে শেখেনি সে। প্রতিবন্ধকতাকে পায়ের নীচে চাপা দিয়ে সে লড়ছে। টেবিল টেনিসে সে খেলোয়াড় মিহির ঘোষের কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এর মাঝে হঠাৎ করেই সে পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় ডিফলিম্পিক্সের ট্রায়াল৷ যেখানে বাংলার সমস্ত প্রতিনিধিদের মধ্যে তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে অভিষা। আশা করা যায়, ডিফলিম্পক্সে স্বর্ণজয় করে ঘরের মেয়ে অভিষা ঘরে ফিরবে। 

তথ্যসূত্র- প্রহর ডট ইন

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা


No comments