বিপ্লবের জন্য চড়াই হত্যা নাকি অন্য কিছু? জানতে হলে দেখতে হবে 'ব্যাধ'
সিনেমা মানে কেবল বিনোদন-ই নয় শিক্ষাও। বাঙালি সবসময় সিনেমার মধ্যে পেতে চায় নতুনত্ব ও শিক্ষা। চিরাচরিত নায়ক নায়িকা খলনায়কের বাঁধাধরা নিয়মকে ভেঙে বাংলা সিনেমা ও ওয়েব সিরিজ গুলি বর্তমানে স্বতন্ত্র। পরিচালক অভিরূপ ঘোষের 'ব্যাধ' ওয়েব সিরিজ এরকমই একটি ওয়েব সিরিজের উদাহরণ। রাজর্ষি দাশ ভৌমিকের লেখা 'চড়াই হত্যা রহস্য' অবলম্বনে তৈরি ব্যাধ বাংলা সিনেমার একটি অনন্য ধারাকে প্রকাশ করে।
সাধারণ ক্রাইম থ্রিলার বা মৃত্যুরহস্য আমরা অনেক দেখেছি। কিন্তু যে ঘটনা গুলো একটি পাগলাটে বা অবান্তর হলেও সত্যি, সেরকম ঘটনা নিয়েও তো পুলিশের ডিপার্টম্যান্ট থাকা উচিৎ। এই ওয়েব সিরিজে সেরকমই একটি ডিপার্টম্যান্টের কথা বলা হয়েছে। ডিপার্টম্যান্ট অফ আনইউজিয়েল কেসেস নামে একটি নতুন ডিপার্টম্যান্টের কথা বলা হয়েছে।
চিরাচরিত ওয়েব সিরিজের গল্প দিয়ে রিভিউতে যাচ্ছিনা কারণ যারা ওয়েব সিরিজটি এখনও দেখেননি অযথা তাদের ওয়েব সিরিজের এক্সপিরিয়েন্স মাটি করার শখ আমার নেই।
চড়ুই এর হত্যা রহস্য, মাউ-সেতুং এর চীনের চড়ুই হত্যা রহস্য, প্রতিটি খুন-ই যে খুন তা বোঝাতে চাওয়া, নকশাল আন্দোলন ও পাখি মারার বিপ্লবকে ছড়িয়ে দিতে কোনো মানুষের হিস্টিরিক পাগলামির প্রকাশ এসব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি অন্যরকম ওয়েব সিরিজ। শিশু ও আবাল-বৃদ্ধ বনিতা সবার জন্য-ই এই ওয়েব সিরিজটি একটু অন্যরকম অভিজ্ঞতা দিতে পারে।
সত্যজিৎ রায় বা বিষ্ণু শর্মা বা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এনারা সকলেই বাঙালির একটি সাহিত্যের নতুন দিক খুলে দিয়ে গেছেন সেরকম একটি ধারাই রাখা হয়েছে এই ওয়েব সিরিজে। বাঙালির চেতনা, সমাজ এসব নতুনত্বকেই প্রকাশ করেছে সবদিন। এই ওয়েব সিরিজের বিশেষ দিক হলো ওয়েব সিরিজে গ্রাম-বাংলার সবুজ প্রকৃতিকে অনবদ্য ভাবে তুলে ধরা। এটাই বাঙালির বাঙালিয়ানা নির্ভর ওয়েব সিরিজ।
এই ওয়েব সিরিজে ভানু সমাদ্দারের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন খরাজ মুখোপাধ্যায়, সৌভিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সৌমেন বসু, কানাই চরণ দাসের চরিত্রে অভিনয় করেছেন রজতাভ দত্ত, ওর্নিথোলজিস্ট তনিমা সেনের ভূমিকায় অনসূয়া মজুমদার, ফরেন্সিক স্পেশালিস্ট মৃণালিনীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিবৃতি চ্যাটার্জী এবং খুনী বিশুর ভূমিকায় অনির্বাণ চক্রবর্তী। প্রত্যেকের-ই অভিনয় ছিল চোখে পড়ার মতো। সব অভিনেতা অভিনেত্রীর মুখবিকৃতি ছিল যথেষ্ট সাবলীল। পরিচালনাতেও রয়েছে যথেষ্ট দক্ষতা। পরিচালনা, অভিনয় এসবের ত্রুটি খুঁজে বের করা খুবই দুষ্কর এই ওয়েব সিরিজে। এ ধরণের ওয়েব সিরিজ গুলিই বাংলা ও বাঙালির ভবিষ্যৎ।
প্রতিবেদন- অমিত দে
Post a Comment