Header Ads

টাচ ফ্রি ও পোর্টেবল হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানিয়ে পেটেন্ট পেল চুঁচুড়ার অভিজ্ঞান কিশোর দাস


করোনা আসার পর স্যানিটাইজার এখন মানুষের নিত্যদিনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে।  করোনার ভ্রুকুটি এড়াতে প্রায় সকলেই বারবার হাতে স্যানিটাইজার স্প্রে করছেন। অফিসের কাজে তা সম্ভব হলেও চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে শল্য চিকিৎসকদের পক্ষে তা সম্ভব নয় কারণ অপারেশনের পর ঘন ঘন স্যানিটাইজারের বোতলে হাত দিলে বিপদের হালকা সম্ভাবনা থাকে। তাহলে বোতলে হাত না রেখে স্যানিটাইজার ব্যবহারের উপায় কী? ঠিক এখানেই তাক লাগিয়ে দিয়েছে নবম শ্রেণীর এক কৃতী ছাত্র। হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র অভিজ্ঞান কিশোর দাস তৈরি করেছে টাচ ফ্রি ও পোর্টেবল হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এই যুগান্তকারী উদ্ভাবনের জন্য সে ইতিমধ্যেই অর্জন করে ফেলেছে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার দ্বারা স্বীকৃত পেটেন্ট। 


অভিজ্ঞান কিশোর দাস এই নামটা হয়তো অনেকেরই চেনা। বহুবার খবরের শিরোনামে অনেকেই পড়েছেন তাকে নিয়ে। ছোটো থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি তার অগাধ আগ্রহ। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো মাধ্যমিক শিক্ষাও শেষ হয়নি তার অথচ তার আগেই সে একগুচ্ছ আবিষ্কার করে বিজ্ঞান জগতের উজ্জ্বল প্রতিভা হয়ে উঠছে। 

২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্টিভ্যালে এই মেশিন তৈরি করে সম্মানিত হয়েছিল সে। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানী মহুয়া হোম চৌধুরী তার এই কাজে সহযোগিতা করেছেন৷ তিনিই এই প্রজেক্টটির পেটেন্ট করিয়েছেন৷  

অভিজ্ঞান কিশোর দাসের কাছে ২০২১ সালটা সত্যিই স্মরণ করার মতো। যেমন গত ১১ ই ডিসেম্বর গোয়ার রাজধানী পানাজিতে ভারতের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান পেয়েছিল তার নির্মিত তথ্যচিত্র। এই উৎসবে ৭০ টিরও বেশি দেশ থেকে ৭৪১ টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছিল, সেখান থেকে বেছে নেওয়া হয় মাত্র ৫৫ টি চলচ্চিত্রকে। যার মধ্যে স্থান পেয়েছিল হুগলির চুঁচুড়ার অভিজ্ঞান কিশোর দাস পরিচালিত 'আধুনিক ভারতের সুশ্রুত পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্ত' ছবিটি।

শুধু তাই নয়, ২০২১ সালের মার্চে সে সোনি বিবিসি আর্থ আয়োজিত ইয়ং আর্থ চ্যাম্পিয়ন কনটেস্টে বায়ুদূষণ রোধ করার যন্ত্র 'সেফ পল্যুট্যান্ট' আবিষ্কার করে সেরার সেরা শিরোপা জিতেছিল। তাঁর আবিষ্কৃত এই যন্ত্রের পেটেন্টও রয়েছে।  এছাড়াও শহরাঞ্চলের মজে যাওয়া পুকুরকে কীভাবে সংস্কার করা যায় তার মডেল বানিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র বানিয়েছিল সে। ভারতের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসবের জল বিভাগে তা প্রথম স্থান অর্জন করেছে।

২০১৯ সালে ট্রেনের চালক ঘুমিয়ে পড়লে বা হৃদরোগে আক্রান্ত হলে ট্রেন দুর্ঘটনার হাত থেকে কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে সেই নিয়েও একটি যন্ত্র তৈরি করেছিল সে। অভিজ্ঞানের স্বপ্ন ভবিষ্যতে আরো অনেক অনেক উন্নতমানের জনকল্যাণমুখী ও যুগান্তকারী যন্ত্র আবিষ্কার করা। অভিজ্ঞান কিশোর দাসের মতো খুদেরাই আগামীদিনের  বাংলার সম্পদ। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments