পান্নালাল ভট্টাচার্যের সুরে শ্যামা সঙ্গীত শ্যামা পূজার সকালকে মধুর করে তোলে
দুর্গাপূজার আগে মহালয়া ও আগমনী গানের সুর ছাড়া যেমন দুর্গাপূজা জমেনা, ঠিক সেরকমই কালীপূজাতেও পান্নালাল ভট্টাচার্যের সুরে শ্যামা সঙ্গীত বাঙালির চাই-ই চাই।
ভূত চতুর্দশী, কালীপূজা, দীপাবলি, জামাই ফোঁটা, ভাই ফোঁটা এক সাথে এতগুলো পার্বণ বাঙালিকে উদ্বেল করে রাখে। সেই সুন্দর মুহূর্তের মাঝে পান্নালাল ভট্টাচার্যের সুরে 'আমার মায়ের পায়ের জবা হয়ে', 'সকলি তোমারই ইচ্ছা', 'আমায় দে মা পাগল করে', 'আমার চেতনা চৈতন্য', 'তুই নাকি মা দয়াময়ী', 'আমার সাধ না মিটিল' এগুলো না শুনতে পেলে মনে হয়না যে কালীপূজা চলছে বলে। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকল বাঙালি এই গানগুলো শুনে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে।
বাঙালির কৃষ্টির সাথে এসব ভক্তিগীতির একটা যোগাযোগ রয়েছে চিরকাল। রামপ্রসাদ সেন, কমলাকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা গানগুলো পান্নালাল ভট্টাচার্যের গলায় যেন একটা নতুন মাত্রা পেয়েছিল। যে গানগুলো কালিসাধক, শাক্ত ও কালীভক্তদের মনে প্রভাব ফেলেনি এমন হয়তো কেউই নেই।
বর্তমান প্রজন্ম তার গান গুলো শুনলেও পান্নালাল ভট্টাচার্যকে হয়তো চেনেই না। এই সব শ্যামাসঙ্গীত আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। শ্যামাপূজা, দীপাবলি এগুলোও যেন বাঙালি ভুলে যাচ্ছে দেওয়ালী, ধনতেরাসের মতো অবাঙালি উৎসবের প্রভাবে। বাঙালিকে এইসব সম্পর্কে উদাসীনতা ত্যাগ করতে হবে। যেটা তার নিজের কৃষ্টি সেটা বাঙালিকেই ধরে রাখতে হবে।
চল্লিশটি শ্যামাসঙ্গীত গেয়েছিলেন পান্নালাল ভট্টাচার্য যার বেশিরভাগই আজও সমানভাবে জনপ্রিয়। এতো কম বয়সে এতগুলো গান জনপ্রিয় হয়তো খুব কম গায়কের-ই আছে। ৩৬ টি আধুনিক গান ও ৩ টি বাংলা ছায়াছবিতেও তিনি গান করেছিলেন। বাংলা সঙ্গীত জগতে পান্নালাল ভট্টাচার্যকে চেনেন না এমন মানুষ বিরল। এমন শ্যামাসঙ্গীতগুলোই তো বাংলা গান ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
প্রতিবেদন- অমিত দে
Post a Comment