Header Ads

জাপান নয়, এই বাংলার ক্ষিরাইতেই রয়েছে ফুলের উপত্যকা


ফুলের উপত্যকা দেখতে বাঙালি ছুটে যায় জাপান থেকে কাশ্মীর কিন্তু আমাদের ঘরেই রয়েছে ফুলের উপত্যকা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ক্ষিরাই যাকে ফুলের উপত্যকা বলাই যায়। ক্ষিরাই স্টেশন থেকে নেমেই গ্রামের পর গ্রামের জমিতে হয় ফুল চাষ। এই ফুলের সৌরভ যে-কোনো মানুষকে মোহিত করবেই। 


এখানকার জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাঁদা যেমন রক্তগাঁদা, সাদা রঙের গাঁদা, রজনীগন্ধা, রং বেরঙের এস্টার ফুল, ডালিয়া, ইনকা, গ্ল্যাডিওলাস, গোলাপ, গোলাও, চন্দ্রমল্লিকা, করল, সূর্যমুখী, বাসন্তী, মোরগঝুঁটি ইত্যাদি ফুলের চাষ হয়। সারা বছরই এখানে ফুলের চাষ হয়। এই ফুল দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই ছুটে আসেন মানুষজন। এই রকমারি ফুলের সাথে বিভিন্ন ধরণের প্রজাপতি, ফড়িং, পাখিও চোখে পড়বে আপনার। 

কিলোমিটারের পর কিলোমিটার ফুল চাষ হলে সেই এলাকাকে ফুলের উপত্যকা বলাই যায়। এই ফুল চাষকে ঘিরে এই এলাকায় পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার সমূহ সম্ভাবনা আছে। যদিও সরকারি ভাবে সেরকম কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। যেহেতু এগুলো মানুষের চাষের জমি সেই কারণে পর্যটক আসায় ফুল নষ্ট করার মতো অভিযোগ রয়েছে চাষিদের, এইসব ব্যাপারে সরকারি সাহায্য প্রয়োজন। 

জাপানে যেমন ফুল চাষের সাথে মৌমাছি পালন করা হয় এখানেও সেরকম মৌমাছি পালনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এমনকি বাটারফ্লাই পার্কও তৈরি করা যেতে পারে। সরকারি ভাবে চাষীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এই উদ্যোগ নেওয়া হলে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।

এইসব অঞ্চলের ফুল প্রায় সারা বাংলাতেই রপ্তানি হয়। ক্ষিরাই, কোলাঘাটে রয়েছে ফুলের বাজার। ট্রাক ভর্তি ফুল এখান থেকে রপ্তানি হয়। এই ফুলকে কেন্দ্র করে ফুল, মধু, পর্যটনের সাথে যুক্ত শিল্পের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। 

যেহেতু জলা জায়গাও প্রচুর রয়েছে এখানে তাই সেইসব জলে মাছচাষ-ও হচ্ছে বর্তমানে। এইসব জায়গায় বোটিং এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এখানকার জলা জায়গা গুলিতেও প্রচুর পরিমাণে পদ্ম, শালুক, শাপলা ফুল জন্মায়। এক কথায় এত রকমারি ফুলের উপত্যকা আর নেই বললেই চলে। বাংলার প্রতিটি জায়গা কোনো না কোনোভাবে সমৃদ্ধ। এইসব জায়গা গুলো কাজে লাগিয়ে দূষণ মুক্ত মানব ও পরিবেশ বান্ধব শিল্প গড়ে তোলা যেতে পারে। যার ফলে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।

এই জায়গা নিয়ে সরকারি উদ্যোগ ও মানুষের প্রচার প্রয়োজন। আগামী দিনে ক্ষিরাই বাংলার ফুলের উপত্যকা তকমা পাবে বলেই আমরা আশাবাদী। 

প্রতিবেদন- অমিত দে


No comments