বাংলার দাবাতে নতুন মোড়, গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব জিতলেন মিত্রাভ গুহ
বুদ্ধির খেলা হিসেবে সারা পৃথিবীতে গণ্য করা হয় দাবাকে। এটি একটি ইনডোর গেম। এই খেলাতে বাঙালির উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। আধুনিক ভারতবর্ষে প্রথম দাবা খেলার ক্লাবটি গড়ে উঠেছিল এই বাংলাতেই। প্রথম বাঙালি হিসেবে মহেশ চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় দাবাতে ইতিহাস তৈরি করেন। তারপর দিব্যেন্দু বড়ুয়া, সূর্যশেখর গাঙ্গুলি, সন্দীপন চন্দ, নীলোৎপল দাস, দীপ সেনগুপ্ত, সপ্তর্ষি রায়চৌধুরী ও দীপ্তায়ন ঘোষ; এই আট বাঙালি দাবাড়ু গ্র্যান্ডমাস্টার হন।
ভারতসেরা দাবাড়ু হিসেবে আবারো উঠে এলো এক বাঙালির নাম। সম্প্রতি আরো একজন গ্র্যান্ডমাস্টার পেল বাংলা। রাজ্যের নবম গ্র্যান্ডমাস্টার হলেন দাবাড়ু মিত্রাভ গুহ। মাত্র ২০ বছর বয়সেই হয়ে গেলেন দাবার গ্র্যান্ডমাস্টার। গত শনিবার সার্বিয়াতে জিএম নর্ম পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্র্যান্ডমাস্টারের যোগ্যতা মান পেয়ে যান তিনি।
মিত্রাভ গুহ ইতিপূর্বে দুটি জিএম নর্ম পেয়েছিলেন। জাতীয় সিনিয়র অনলাইন দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে জয়ী হন তিনি। এরপর বাংলাদেশে শেখ রাসেল টুর্নামেন্টে একটি জিএম নর্ম পান তিনি। দাবাড়ুর গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার জন্য যে নিয়মটি মানা হয় তা হলো একজন দাবাড়ু তিনটি জিএম নর্ম ও ২৫০০ রেটিং পেলে তবেই তিনি গ্র্যান্ডমাস্টার হবেন। সার্বিয়ার নোভি সাদেতে আয়োজিত প্রতিযোগিতার নবম রাউন্ডে সে দেশের গ্র্যান্ডমাস্টার নিকোলা সেডলাককে পরাজিত করে তৃতীয় জিএম নর্ম অর্জন করে গ্র্যান্ডমাস্টারের খেতাব জয় করলেন মিত্রাভ গুহ।
সার্বিয়ায় টুর্নামেন্টের আরম্ভটা দারুণভাবে করেন মিত্রাভ গুহ৷ দু'টি ড্র ও একটাও না হেরে ৬-এর মধ্যে ৫ পয়েন্ট পেয়ে যান তিনি৷ তারপর ছন্দপতন হয়৷ তিনি হেরে যান৷ তবে শেষ দুটি ম্যাচ জিতে জিএম নর্ম পেয়ে এবল ২৫০০ রেটিং টপকে নিজের লক্ষ্যে তিনি পৌঁছে যান৷ তাঁর এই অভাবনীয় কৃতিত্বের জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছে সর্বভারতীয় দাবা সংস্থা।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ভারতে গ্র্যান্ডমাস্টারের খেতাব পেলেন কোনো বাঙালি। ২০১৬ সালে শেষবার দাবায় গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলেন দীপ্তায়ন ঘোষ৷ মাত্র চার বছর বয়সেই দাবায় হাতেখড়ি হয় মিত্রাভ গুহের। জগদ্বিখ্যাত দাবাড়ু দিব্যেন্দু বড়ুয়ার কাছে দাবার শিক্ষা শুরু হয় তাঁর। যদিও পরবর্তী কালে অতনু লাহিড়ী-সহ বেশ কয়েকজন কোচের কাছে কাজের প্রশিক্ষণ নেন তিনি৷ সার্বিয়ার টুর্নামেন্টের আগে তিনি সোহম দাসের সঙ্গে কাজ করছিলেন।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment