ইকো-ফ্রেন্ডলি কালীপুজোর খোঁজে পরিবেশ রক্ষার বার্তা হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের
হাওড়াতে পরিবেশ দূষণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। বায়ুদূষণ, জলদূষণ ও শব্দদূষণ যে-কোনো প্রকার দূষণের সম্মুখীন হাওড়া জেলা। এখনই যদি হাওড়ার মানুষ সচেতন না হয় পরিবেশ বাঁচাতে তাহলে ভবিষ্যতে হাওড়া জেলার অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়বে। তাই হাওড়া জেলার পরিবেশ রক্ষা এবং হাওড়ার সকল মানুষের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বহুদিন থেকেই লড়াই করছে হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ।
এই কালীপুজো ও দীপাবলিতে রাতভর ডিজে দূষণ বন্ধ করতে হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ হাওড়া জেলার নানান প্রান্তে নাগরিক নজরদারী চালায়। বহু ক্লাব ও পুজো উদ্যোক্তাদের তাঁরা শব্দদূষণ বায়ুদূষণ ও সামাজিক দূষণ সম্পর্কে বোঝানোর চেষ্টা করে।
কেবল ক্লাব ও পুজো উদ্যোক্তাদের শব্দদূষণ বায়ুদূষণ ও সামাজিক দূষণ সম্পর্কে বোঝানোর চেষ্টায় নয়, হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ এই বছর প্রথম কালীপুজোয় জেলার বিভিন্ন অংশে পরিবেশ বান্ধব পুজোর খোঁজে পরিক্রমার আয়োজন করেছিল। দুর্গা পুজোয় বিভিন্ন পুরস্কারের জন্য প্রচুর আয়োজন ও পরিক্রমার উদ্যোগ নেওয়া হলেও কালীপুজোয় সেটা হয় না বললেই চলে। অথচ কালীপুজোর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় আতসবাজি এবং শব্দবাজির যথেচ্ছ ব্যবহার ও উৎপাতে পরিবেশ দূষণের মাত্রা এক লাফে অনেকটা বেড়ে গিয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। যে কারণে জেলার মধ্যে পরিবেশ বান্ধব পুজোগুলিকে উৎসাহিত করতে পুরস্কার প্রদানের ভাবনা।
জেলাজুড়ে আতসবাজি পোড়ানোর সময়সীমা মানা হচ্ছে কিনা কিংবা নিষিদ্ধ শব্দবাজি রুখতে নাগরিক নজরদারি করার পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন অংশে চালানো হয় পরিবেশ বান্ধব পুজোর খোঁজ। জেলার অন্যান্য অংশের সঙ্গে সঙ্গে গত ৪ ই নভেম্বর থেকে ৬ ই নভেম্বর হাওড়া শহরের দক্ষিণ থেকে উত্তর বেশ কয়েকটি এলাকায় একটি দল পরিবেশ বান্ধব পুজোর খোঁজে পরিক্রমা চালায়। এই দলটি দক্ষিণ হাওড়া, শিবপুর, মধ্য হাওড়া এবং উত্তর হাওড়ার বিগার্ডেন, মন্দিরতলা, রামরাজাতলা, কদমতলা, বামুনগাছি, সালকিয়ায় পরিবেশের উপযোগী পুজোর খোঁজের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার জন্য সচেতনতামূলক প্রচারও চালায়।
পাঁচটি পুজো কমিটির হাতে পুরস্কারের মানপত্র দেওয়া হয়। পরে একটি নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানে তাদের হাতে স্মারক পুরষ্কার তুলে দেওয়া হবে। এই দলের একটা সুন্দর অভিজ্ঞতা হয়। যার মধ্যে ভালো মন্দ দুটোই আছে। কয়েকটি পুজো কমিটি চেষ্টা করেছে পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হতে। তারা অনেক সামাজিক কাজ করেন। তবে যেসব পুজো আয়োজনে পরিবেশ দূষণের মাত্রা বেশি তারা পরিবেশ সংক্রান্ত ত্রুটি শুধরে আগামী বছর পরিবেশ বান্ধব পুজো আয়োজন করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন। এটাই এই কর্মসূচির বড় সাফল্য।
শহর হাওড়ার পাশাপাশি গ্রামীণ হাওড়াতেও একই কর্মসূচী নেওয়া হয়। শ্যামপুর ১ নম্বর ব্লকের কমলপুর মা শিতলা সংঘ, বাগনান থানার অন্তর্গত বাগনান টাইম স্টার, বাগনানের খানপুর নবজাগরণ সংঘ, বেলে জগৎবল্লভপুরের গড়বালিয়া সোনালী শিবির এবং ডোমজুড়ের দক্ষিণ পার্ব্বতীপুর সার্ব্বজনীন শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা ইত্যাদি ইত্যাদি কমিটির পুজোগুলি পরিক্রমা করে তাদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment