যেভাবে বাংলাতে প্রচলন হয় জগদ্ধাত্রী পুজোর
জগদ্ধাত্রী পুজো রাজশাহী জেলার তাহেরপুরের রাজা কংসনারায়ণ রায় যে শরৎকালীন দশভূজা দুর্গা পূজার প্রবর্তন করেন তা বাংলায় অল্প সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে জমিদারদের মধ্যে তারপর অন্যান্যদের মধ্যে।
বলাবাহুল্য সেকেলের নামী জমিদার নদীয়া এস্টেটের রাজারাও দুর্গা পূজা শুরু করেছিল খুব ধুমধাম করে। একবার আশ্বিনের কিস্তিতে মালগুজারীর টাকা বাকী পড়ায় বাংলার নবাব কৃষ্ণনগরের মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকে গ্রেপ্তার করেন। দুর্গাপূজার সময় তাকে আটকে থাকতে হল মুর্শিদাবাদের কারাগারে। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র ফিরে এলেন কোজাগরী পূর্ণিমার পরে। তখন তো আর নতুন করে দুর্গাপূজা করা যায় না। তিনি বললেন, স্বপনে তিনি এক দেবী মূর্তি দেখেছেন। রাজার মুখ থেকে যে বর্ণনা পাওয়া গেল তা তন্ত্রোক্ত রাজরাজেশ্বরী বা ষোড়শী দেবীর সঙ্গে মেলে যা হিন্দু ও মহাযানী বৌদ্ধ উভয় তন্ত্রে স্বীকৃতা। তখন তিনি ঘটা করে এই পূজো করলেন------ দেবীর নাম হল জগদ্ধাত্রী।
পুজোটি অনুষ্ঠিত হল দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হবার ঠিক এক মাস পরে শুক্ল পক্ষে। কিন্তু সময় অল্প থাকায় দেবী পক্ষের সপ্তমী অষ্টমী ও নবমীর পূজা এক সঙ্গে নবমীতে সারা হল। কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর এই ধুমধাম দেখে সেই সময়কার নদীয়া এস্টেটের দীবান সম্ভবত গঙ্গাগোবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের শহর চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রবর্তন করেন।
দুর্গাপুজো যেমন প্রাচীন নয় পাঠান আমলের পূর্বাব্দের জিনিস, তেমনি জগদ্ধাত্রী পূজাও বাংলার নবাবী আমলের অন্তিম কালের।
প্রতিবেদন- গৌতম মন্ডল
তথ্যসূত্র- বাংলা ও বাঙালী, প্রভাত রঞ্জন সরকার
Post a Comment