কাঁধে চোট নিয়েও ব্যাট হাতে দূর্দান্ত ইনিংস দেখালেন বাঙালি ক্রিকেটার ঋদ্ধিমান সাহা
বাঙালি ক্রিকেটার ঋদ্ধিমান সাহা, যাকে অনেকেই দল থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলছিলেন। ট্যুইটারে তাঁকে নিয়ে থ্যাংক ইউ সাহা নামে ট্রেন্ড করা হয়। বলা হয়, বাঙালি নাকি কোটায় খেলে। কেবল জাতিতে বাঙালি হওয়ার জন্য ঋদ্ধিমান সাহাকে নানান অপমান সহ্য করতে হয়৷ কিন্তু তিনি ভেঙ্গে পড়েন নি৷ নিজেকে যোগ্য ক্রিকেটার প্রমাণ করার জন্য একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি৷ এবার সেই সুযোগ আসার পর তিনি তাঁর সদ্ব্যবহার করলেন৷ তিনি দেখালেন বাঙালির কব্জির জোর কতটা।
গতকাল কানপুর টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ঋদ্ধিমান সাহার ইনিংস দেওয়ালে টিমের পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম স্মরণীয় ইনিংস হয়ে থাকবে। দলের প্রয়োজনের সময় অনবদ্য হাফ-সেঞ্চুরি করে ঋদ্ধিমান সাহা নিজের টেস্ট কেরিয়ারে অক্সিজেন জোগালেন।
ঋদ্ধিমান সাহা বরাবরই দলের স্বার্থে খেলেন। এমন সুনাম তিনি এতদিনে অর্জন করে ফেলেছেন। আর গতকাল তিনি সেটাই করলেন আরও একবার৷ মাত্র ১০৩ রানে ৬ উইকেটের পতন হওয়ার পর ভারত কিছুটা ব্যাকফুটে ছিল। এরপরই ঋদ্ধিমান সাহা নেমে হাল ধরেন। সাতে নেমে তিনি আবারো দলের স্বার্থে লড়াই করেন৷ আর তাঁর সেই লড়াই প্রশংসা কুড়িয়েছে। যারা তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়ার কথা অনায়সে বলে গেছেন এতোদিন তাদের মুখের ওপর মোক্ষম জবাব দিলেন তিনি।
রবিবার ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড টেস্টের চতুর্থ দিনের আগে পর্যন্ত ঋদ্ধিমান সাহার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সমালোচনার কাঁটায় ক্রমাগত বিদ্ধ হয়েছেন বাংলার এই উইকেটকিপার ও ব্যাটসম্যান। তাঁর টেস্ট কেরিয়ার নিয়ে অনেকেই নানান কটুক্তি করেছেন৷ এ দিনের ইনিংসের আগে পর্যন্ত ঋদ্ধিমান সাহা বিগত ১৪ ইনিংসে ভারতের হয়ে ১৫৬ রান করেছেন ১৪.১৮-এর গড়ে। তাঁর সর্বোচ্চ রান ছিল ২৯। এমনকি কানপুরেও প্রথম ইনিংসে তিনি মাত্র ১ রান করেছিলেন।
কানপুরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে ঘাড়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। যার জেরে তৃতীয় দিন তিনি কিপিং করেননি। তাঁর বদলে উইকেটের পিছনে ছিলেন কেএস ভরত। তবে চতুর্থ দিন দলের প্রয়োজনে ব্যথা সত্ত্বেও ব্যাট হাতে নেমে পড়েন তিনি৷ শ্রেয়স আইয়ার ও অক্ষর প্যাটেলের সঙ্গে পার্টনারশিপ খেলে দলকে সমূহ বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন তিনি।
ঋদ্ধিমান সাহা এদিন ১২৬ বলে ৬১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তবে ৭ উইকেটে ২৩৪ রানের মাথায় ভারতীয় অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে ডিক্লেয়ার করেন। ঋদ্ধিমান সাহা এদিন সাত নম্বরে নেমে এমন ইনিংস না খেললে কানপুরে চাপ বাড়ত ভারতের। তাঁর ইনিংসটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়।
তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করে ভারতের ক্রিকেট দলের কোচ বলেন, "যখনই ঋদ্ধিকে দরকার পড়েছে, ও নির্ভরতা দিয়েছে। যখন ঋষভকে পাওয়া যায় না, তখন ঋদ্ধি নিজের দায়িত্ব পালন করে৷ গতকালের পারফরম্যান্স দিয়ে ও আরও একবার দেখালো যে, ও কত গুরুত্বপূর্ণ এবং কত ভালো ক্রিকেটার।"
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment