পাঁচ দশক ধরে বাংলার কেকের জগতে রাজত্ব চালাচ্ছে বঙ্গজীবনের অঙ্গ বাপুজী কেক
বাঙালিকে অনেক সময় খাবার দিয়েও ব্যাখ্যা করা হয়। খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে বাঙালিরা বেশ যত্নশীল। কালের নিয়মে বাঙালির খাদ্য তালিকায় যুক্ত হয়েছে দেশ-বিদেশের নানান খাবার। বাংলায় কেকের আগমন ঘটে উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে। ব্রিটিশদের হাত ধরে বাংলায় কেক খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়। তারপর থেকে বাঙালি নিজের মতো করে আপন করে নিয়েছে কেককে। আজকে বাঙালির কাছে বড়দিন কেক ছাড়া অসম্পূর্ণ। এখন বাঙালির কাছে টিফিনের জন্য অত্যন্ত প্রিয় একটি পদ হলো কেক।
টিফিন কেক বললেই বাঙালির মুখে যে নাম উচ্চারিত হয় তা হলো 'বাপুজী কেক'। যে কেকের স্বাদ ও গন্ধ অতুলনীয়। যে কেকের বয়স পঞ্চাশ পেরিয়ে গেছে। পাঁচ দশক ধরে বাঙালির মুখের রসনা মিটিয়ে আসছে বাপুজী কেক। ১৯৭৩ সালে জানা পরিবারের হাত ধরে বাংলার মধ্যবিত্তের ঘরে ঘরে ঢুকে পড়ে বাপুজী কেক। জানা পরিবারের অন্যতম এক সদস্য অলোকেশ জানা সর্বপ্রথম 'দ্য নিউ হাওড়া বেকারি' নামে একটি কেক সংস্থার রেজিস্ট্রেশন করেন। খেটে খাওয়া মানুষ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের টিফিন বক্সে বাপুজী কেকের চাহিদা এখনও তুঙ্গে। বাপুজী কেককে বঙ্গজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশও বলা যায়।
পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও বাপুজী কেকের জনপ্রিয়তা সমানভাবে অটুট। যে-কোনো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের কেকের সাথে পাল্লা দিয়ে চলে বাপুজী কেকের ব্যবসা। এই কেকটির বিশেষত্ব হলো পাতলা তেলতেলে কাগজে মোড়া সাধারণ প্যাকেজিং-এও এই কেক বাঙালির মন জয় করেছে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিদিন বাজারে প্রায় ৫০,০০০ বাপুজী কেক বিক্রি হয়। বাপুজী কেক তৈরির প্রথম ইউনিট তৈরি হয় হাওড়ার পল্লবপুর অঞ্চলে। তারপর কলকাতার লেকটাউন ও হুগলির শ্রীরামপুরে তৈরি হয় বাপুজী কেকের কারখানা।
চায়ের সাথে তৃপ্তি করে খাওয়ার মতো এক সুস্বাদু কেক হলো বাপুজী। বাজারে ৬ টাকা মূল্যে পাওয়া যায় এই কেক। মধ্যবিত্ত বাঙালির পকেটের বন্ধু এই কেক। সকালবেলা ও বিকেলবেলা হালকা জলখাবারের জন্য উপযুক্ত একটি বস্তু হলো বাপুজী কেক। এই কেকটি মূলত ফ্রুট কেক। বর্তমানে বাপুজী কেকের জনপ্রিয়তা বাড়াতে এবং ব্যবসার খাতিরে কেকের পাশাপাশি বিভিন্ন বিস্কুট ও পাউরুটির প্রোডাকশনের কথাও ভেবেছে। সেই থেকেই বাজারে হরেক রকমের বিস্কুট এবং পাউরুটিও বাপুজীর পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment