Header Ads

২৮ বছর বয়সী বঙ্গসন্তান বানালেন বাংলার এক অন্যতম চায়ের ব্র্যান্ড 'চা-খোর'


বাঙালির দ্বারা ব্যবসা হয়না, এই মিথটি বহুল প্রচলিত। যে মিথকে একটু একটু করে ভেঙ্গে ফেলছে বর্তমান প্রজন্মের বাঙালি ছেলেমেয়েরা। বাঙালিও যে ব্যবসা পারে সেটা আবারো প্রমাণ হচ্ছে। যেমন বাংলায় চায়ের জগতে অন্যতম ব্র্যান্ড হিসেবে ঢুকে পড়েছে 'চা-খোর'। ২৮ বছর বয়সের এক তরতাজা বাঙালি যুবক সন্দীপ জোয়ারদার বানিয়েছেন বাঙালির এই নিজস্ব চায়ের ব্র্যান্ড 'চা-খোর'। যার যাত্রা শুরু হয় জলপাইগুড়ি শহর থেকে। 


অল্পদিনের মধ্যেই জলপাইগুড়ি শহরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে চা-খোর। সন্দীপ জোয়ারদারের নিজস্ব ভাবনায় তৈরি চায়ের রেসিপি মন জয় করে নিয়েছে নতুন প্রজন্মের। তাঁর তৈরি করা পাঁচ রকমের চায়ের রেসিপি আজ পঞ্চাশে পৌঁছে গেছে। এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন জলপাইগুড়ির পর কলকাতার মানুষকে দার্জিলিং চায়ের স্বাদ পৌঁছে দিতে হবে। চলতি বছরের শুরুতেই কলকাতার বুকে কেষ্টপুরে দ্বিতীয় চায়ের আউটলেট খোলেন তিনি৷ বর্তমানে কেষ্টপুরের পর কাঁচরাপাড়াতেও আরো একটি নতুন আউটলেট খুলেছেন সন্দীপ জোয়ারদার।   তাঁর স্বপ্ন ভবিষ্যতে রাজ্যের অন্যান্য জেলা ও রাজ্যের বাইরেও বিভিন্ন জায়গাতে চা-খোরের আউটলেট খোলা। 

এককথায় বলতে গেলে চা-খোর বাংলার বুকে চায়ের জগতে নবজাগরণ ঘটাচ্ছে৷ চা-খোর তৈরি করার জার্নিটা ছিল বেশ কঠিন। ২০১৯ সালের কথা, জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির এক অত্যন্ত সাধারণ এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে সন্দীপ জোয়ারদার যে ভূগোলে মাস্টার্স ও বিএড সম্পূর্ণ করে মনস্থির করেন যে চাকরি টা বোধহয় তার জন্য নয়। অতএব তিনি নিজস্ব উদ্যোগে  নিজের পরিচিতি তৈরির কাজে নেমে পড়লেন৷ তিনি নতুন কিছু ব্যবসা করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু তাঁর ভারী অর্থের সমস্যা, তাহলে ব্যবসা করতে তিনি কী পারবেন? একটা রিস্ক নিয়েই বসলেন তিনি৷ তাঁর হাতে যেটুকু পুঁজি ছিল সেই পুঁজিকে কাজে লাগিয়ে এবং কিছু টাকা ধার নিয়ে খুলে ফেলেন একটা আস্ত চায়ের দোকান। আর সেই একই সফরে ২০২০  সালে যোগ দেন তাঁর দাদা সৌরভ জোয়ারদারও।

উচ্চশিক্ষিত হয়ে তিনি চায়ের দোকান খুলেছেন, এই ব্যাপারটা অনেক মানুষ একটু নিম্ন চোখে দেখতে থাকে৷ তাতে কী? সমস্ত লোকলজ্জাকে আড়াল করে রাতদিন এক করে মাথা উঁচু করে চা বিক্রি করে গেলেন তাঁরা। তবে চায়ের দোকানেকে কীভাবে আধুনিকতার ছোঁয়া দেওয়া যায় এবং বিভিন্ন ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করে নতুন কী ধরনের চা মানুষকে খাওয়ানো যেতে পারে; এই নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে থাকেন তাঁরা। সাথে সাথেই  কী করে জলপাইগুড়ি শহরের বাইরে চা-খোরের আউটলেট করা সম্ভব তার পরিকল্পনা করতে থাকেন৷ তাঁরা আড্ডাবাজ বাঙালির চায়ের প্রতি নেশাকে সামঞ্জস্য রেখে  দোকানের নাম রাখলেন 'চা-খোর'।  

জলপাইগুড়ি শহরে 'চা-খোর' এই দোকানটি পথচলতি মানুষের চোখে বেশি করে পড়তে থাকে। একটু একটু করে ভিড় জমতে শুরু করলো 'চা-খোর'-এ। একসময় জলপাইগুড়ি শহরের বুকে জনপ্রিয় চায়ের ঠেক হয়ে উঠলো 'চা-খোর'। এরপর তাঁরা বুদ্ধি খরচ করে এটাকে মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং করতে থাকেন। আর এখন চা-খোরকে নিয়ে প্রতিনিয়ত সোশ্যাল মিডিয়াতে জোর চর্চা চলছে। জলপাইগুড়ির পর মহানগরী কলকাতার মানুষের কাছেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে চা-খোর। আজকে সন্দীপ জোয়ারদারের প্রসঙ্গে অনেকে যে কথাটি বেশি করে বলছেন তা হলো তিনি "Bengal's First Youngest Iconic Bengali Chaiwala". 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments