চাঁদের আঁধারের রহস্য উন্মোচন করবে বাঙালি বিজ্ঞানীর তৈরি শ্যাডো ক্যামেরা
চাঁদের গায়ে কলঙ্কের আঁধার। চাঁদের গায়ে এই আঁধার আসলে কী? চাঁদের গায়ে কালো কালো অংশে কী আছে? যা জানার কৌতূহল বহু মানুষেরই। চাঁদের আঁধার নিয়ে লেখা হয়েছে বহু রূপকথার গল্পও। বিজ্ঞানীদের কাছেও বিষয়টি অন্যতম আলোচ্য বিষয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে আজও অজানা চাঁদের আঁধারের বিষয়টি। যা জানলে হয়তো অনেক অজানা বস্তুর সন্ধান পাওয়া যাবে চাঁদে। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানীমহলে গবেষণা চলছে।
চাঁদের আঁধারের রহস্য উন্মোচন হতে চলেছে এবার, তাও আবার এক বাঙালি বিজ্ঞানীর হাত ধরে। চাঁদের আঁধারে আলোর দিশা দেখাতে চলেছে শ্যাডো ক্যামেরা। এর নেপথ্যে রয়েছেন অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির বাঙালি বিজ্ঞানী প্রসূণ মহান্তি। তাঁর তত্ত্বাবধানে তৈরি এই ক্যামেরা ২০২২ সালের আগস্ট মাসে কেপ ক্যানাভেরাল থেকে স্পেস-এক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটে চড়ে পাড়ি দেবে চাঁদের 'আঁধার' দেশে।
দক্ষিণ কোরিয়ার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র 'কোরিয়ান অ্যারোস্পেস রিসার্চ ইনস্টিটিউট' এই প্রথমবার কোনো মহাকাশযান পাঠাতে চলেছে। তাতে আরোহন করেই ইতিহাস গড়তে চলেছে বাঙালি বিজ্ঞানীর শ্যাডো ক্যামেরা। মহাকাশ উৎক্ষেপণের পর এটিকে চাঁদের কক্ষপথে স্থাপন করা হবে। প্রায় এক বছর ধরে চন্দ্রপৃষ্ঠের ১০০ কিলোমিটার উপর থেকে আঁধার এলাকার ছবি তুলবে ক্যামেরাটি।
প্রসূণবাবুর মতে, চাঁদের এই ছায়া ভরা এলাকায় কী রয়েছে, যার সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও স্পষ্ট কোনো ধারণাই নেই। সেখানকার খনিজ বস্তু থেকে আরম্ভ করে আবহাওয়া-- সব কিছু বুঝতে সহযোগিতা করবে এই ক্যামেরা।
গ্রহ-নক্ষত্র থেকে খনিজ সম্পদ আরোহণের আশায় বহু দেশ বুক বাঁধছে৷ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্র থেকে খনিজ সম্পদ সংগ্রহের জন্য পরিকল্পনাও শুরু করে দিয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কথায়, চাঁদের এই আঁধারে লুকিয়ে আছে বহু মূল্যবান রসদ। কিন্তু সেগুলো আসলে কী, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তাই আরও বিস্তারিত গবেষণার জন্য ২০১৭ সালে এই ক্যামেরা তৈরির কাজ আরম্ভ হয়৷ যার নেতৃত্বে ছিলেন বিজ্ঞানী মার্ক রবিনসন। প্রসূণবাবুরর অভিমত, শ্যাডো ক্যামেরার সাহায্যে যদি চাঁদের আঁধারে কোনো মূল্যবান খনিজের সন্ধান মেলে, তবে এই সংক্রান্ত গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলবে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে চাঁদের এই অংশে নভশ্চররা যদি কোনোদিন পা রাখে, তবে সেই অভিযানে সহায়তা করবে তার তোলা ছবিগুলো।
আপাতত এই ক্যামেরার সবরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে৷ বর্তমানে যেটি কোরিয়াতে রয়েছে। যা কোরিয়ান পাথফাইন্ডার লুনার অরবিটার নামক কৃত্রিম উপগ্রহে স্থাপন করা হবে। ঐ কৃত্রিম উপগ্রহে এই ক্যামেরাটি ছাড়াও আরও চারটি যন্ত্র থাকবে। যে যন্ত্রগুলি সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে আলো ফেলবে চাঁদের অন্ধকার অংশের দিকে।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment