দশাবতার তাস ও পটের গান থিম হয়ে ধরা দিচ্ছে দলমাদল সার্ব্বজনীন দুর্গোৎসবে
বাঁকুড়া জেলার অন্যতম সেরা পুজোর মধ্যে একটি হলো 'দলমাদল সার্ব্বজনীন দুর্গোৎসব'। চলতি বছরে তাদের পুজো পদার্পণ করলো ১৮ তম বর্ষে। এবছর তাদের থিম ভাবনা ''এবার মায়ের পুজো ঘটে নয়, পটে"। অর্থাৎ এই থিমের মাধ্যমে পট চিত্রকলাকে তুলে ধরা হচ্ছে। এই পট চিত্রকলার মধ্যে রয়েছে দুটো আঙ্গিক, একটি হলো দশাবতার তাস এবং অপরটি বাংলার পটের গান। দশাবতার তাস ও বাংলার পটের গান প্রায় হারিয়ে যাওয়া এই দুটো শিল্পকে থিম হিসেবে বেছে নেওয়ার মূল কারণ হলো এই দুটো শিল্পের প্রসার।
পুজোর মণ্ডপের মধ্যে থাকছে দশাবতার তাস। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের এক প্রাচীন তাস হলো দশাবতার তাস। এই তাসে বিষ্ণুর দশ অবতারের চিত্র লক্ষ্য করা যায়। এক প্রস্ত দশাবতার তাস তৈরিতে মোট ১২০ টি তাস লাগে। এই ১২০ টি তাস পেইন্টিং করে মণ্ডপের জন্য বানানো হয়েছে। এই পেইন্টিং যুক্ত দশাবতার তাস ও হাতে আঁকা লাটাইয়ের পটচিত্র দিয়ে মণ্ডপটি সাজানো হয়েছে। এছাড়াও মণ্ডপসজ্জার জন্য গামছাও ব্যবহৃত হয়েছে ৷
মণ্ডপের পাশাপাশি মূর্তিতেও থাকছে অভিনবত্ব। পটে আঁকা দুর্গা দেখতে যেমন হয় ঠিক সেরকই পটে আঁকা মাটির প্রতিমা বানানো হয়েছে। যা বসানো হয়েছে দশ ফুট বাই দশ ফুট একটি তাসের ওপর। প্রতিমার জন্য বানানো হয়নি কোনো মঞ্চ। এখানে প্রতিমা ঝুলন্ত অবস্থায় মণ্ডপে থাকবে। এমনকি প্রতিমার চতুর্দিকে তাসের ওপর থাকবে দশমহাবিদ্যা।
দশাবতার তাস ও বাংলার পটের গান নিয়ে মণ্ডপের ভেতরে লাইভও চলবে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত। দশাবতার তাসের শিল্পী সবার সামনে দশাবতার তাস বানিয়ে বিক্রি করবেন। একইসঙ্গে পটের গানের শিল্পীরাও গান গাইতে গাইতে পট এঁকে বিক্রি করবেন। সব মিলিয়ে এক অনবদ্য ভাবনার প্রতিফলন ঘটতে চলেছে দলমাদল সার্ব্বজনীন দুর্গোৎসবে। প্রতি বছরই এই পুজোতে এরকম নানাপ্রকার নান্দনিক বিষয় চোখে পড়ে৷ গত বছর বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও বিশ্ববাংলার বিচারে বাঁকুড়া জেলার সেরা পুজোর শিরোপা অর্জন করেছিল এই পুজো।
থিমশিল্পী সৌভিক কালীর ভাবনা ও পরিকল্পনাতে তৈরি হয়েছে সমগ্র মণ্ডপ এবং প্রতিমা তৈরি করেছেন মৃৎশিল্পী চঞ্চল সূত্রধর। সমস্ত রকম বিধিনিষেধ ও সরকারি নির্দেশিকা মেনেই আয়োজন করা হচ্ছে এই পুজোর৷ 'দলমাদল সার্ব্বজনীন দুর্গোৎসবে'র সম্পাদক সুজিত কুমার সাঁতরার তত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে এই পুজোটি।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment