হুবুহু অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির উঠে এলো এ-৯ স্কোয়ার পার্ক সার্বজনীনের পুজোতে
জেলায় জেলায় চলছে পুজোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। অন্যান্য জেলার মতো নদীয়া জেলাতেও হচ্ছে জমকালো ভাবে দুর্গাপুজো। নদীয়া জেলার বিগ বাজেটের পুজোর মধ্যে অন্যতম কল্যাণীর "এ-৯ স্কোয়ার পার্ক সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গাপুজো"। চলতি বছরে অর্ধশতাব্দীর রণতরী পার করলো এই পুজো। করোনা আবহেও তাদের এ বছর পুজোর বাজেট প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা। পুজোর আয়োজনে কোনো খামতি রাখতে চাইছেন না তাঁরা। সমস্ত রকম বিধিনিষেধ মেনেই সম্পন্ন হচ্ছে এখানকার পুজো।
দশকের পর দশক ধরে বিভিন্ন ধরনের থিম এখানে লক্ষ্য করা যায়। এ বছর অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। স্বর্ণমন্দিরের অবিকল চেহারা ফুটিয়ে তোলার জন্য মণ্ডপে ব্যবহৃত হয়েছে পেতল। আমরা দেখেছি, পাঞ্জাবের অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরের চারপাশে সংরক্ষিত জলাশয় রয়েছে। যে জলাশয়টিও এখানে কৃত্রিম ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। মণ্ডপটি দর্শন করলে মনে হবে যেন অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির কল্যাণীতে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে।
অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরকে মণ্ডপ রূপে গড়ে তোলা যথেষ্ট কঠিনতর কাজ। অথচ মণ্ডপে চোখ রাখলে মনে হবে কত সহজেই শিল্পীরা স্বর্ণমন্দিরকে মণ্ডপ রূপে গড়ে তুলেছেন। শিল্পীদের হাতের জাদুতে সৃষ্টি হয়েছে এক বিস্ময়কর দৃশ্য। যা সব বয়সের মানুষদের একরাশ মুগ্ধতায় ভরিয়ে দেবে।
শুধু মণ্ডপই নয়, প্রতিমাতেও থাকছে আকর্ষণ। কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির মৃৎশিল্পীরা তৈরি করেছেন প্রতিমা৷ বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিল্প টেরাকোটার হালকা ছাপও দেওয়া হয়েছে প্রতিমার গায়ে। এ বছর এখানে পুজোর যে বৈশিষ্ট্যটি রয়েছে তা হলো স্বর্ণমন্দিরে দুর্গা দর্শন করতে চলেছেন দর্শনার্থীরা।
মণ্ডপ, প্রতিমার পাশাপাশি চন্দননগরের চোখধাঁধানো আলোকসজ্জাও উদ্বেল করবে সকলকে৷ গতকাল অর্থাৎ তৃতীয়ার সন্ধ্যায় গুরুদুয়ারা কাঁচড়াপাড়ার প্রতিনিধিরা উদ্বোধন করেন পুজো মন্ডপের। কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অভিজিৎ পাল ও অসিত পালের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আয়োজিত হচ্ছে এই মহাবাজেটের পুজোটি। ষষ্ঠী থেকে নবমী চারদিন ধরে এ-৯ পাড়ার সকল পরিবারের লোকেদের জন্য থাকছে ভোজনের ব্যবস্থা।
পুজো কমিটির তত্ত্বাবধানে সম্প্রতি ফ্রী ভ্যাক্সিনেশনের আয়োজন করা হয়। নদীয়া জেলার মধ্যে সম্ভবত তাঁরাই প্রথম কোনো পুজো কমিটি যারা বিনামূল্যে ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পের আয়োজন করলেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের তত্ত্বাবধানে এবং কল্যাণী এ-৯ স্কোয়ার পার্ক দুর্গাপুজো কমিটির উদ্যোগে পুজোর ময়দানের ক্লাবঘরে গত বৃহস্পতিবার সকালে অনুষ্ঠিত হওয়া এই ক্যাম্প থেকে মোট ১০০জন মানুষকে কোভিসিল্ডের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়।
পুজোর মণ্ডপের সামনে যে মাঠ রয়েছে তাতে অক্সিজেন পার্লারেরও ব্যবস্থা থাকছে। এমনকি অ্যাম্বুলেন্সেরও ব্যবস্থা থাকছে। পুজো কমিটির আওতায় পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক ও স্যানিটাইজারও রাখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ-৯ স্কোয়ার পার্ক সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গাপুজো এক নজরকাড়া পুজো উপহার দিতে চলেছে কল্যাণীবাসীদের।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment