থিম নয়, আজও সাবেকিয়ানাতেই বিশ্বাসী 'চাতরা শীতলাতলা সর্বজনীন'
বাংলার মধ্যে এক টুকরো ইউরোপ হলো শ্রীরামপুর৷ যে শহরের কথা বলতে গেলে সবার প্রথমে মাথায় আসে মাহেশের রথযাত্রা। ইতিহাসের বিচারে মাহেশের রথযাত্রা ভারতে পুরীর পর দ্বিতীয় প্রাচীন রথযাত্রা। তবে দুর্গাপুজোতেও পিছিয়ে নেই শ্রীরামপুর। প্রত্যেক বছর জমকালো ভাবে শ্রীরামপুরে আয়োজিত হয় দুর্গাপুজো। এই শ্রীরামপুরের অন্যতম সাবেকি পুজো হলো 'চাতরা শীতলাতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি'র পুজো।
এই কমিটির পুজোতে নেই কোনো থিমের আভিজাত্য বা বিগ বাজেট। তবুও শ্রীরামপুরের মানুষের প্রাণের পুজো 'চাতরা শীতলাতলা সর্বজনীন'। শ্রীরামপুর শহরের সেরা প্রতিমা হিসেবে নজর কাড়ে এই কমিটির পুজো৷ চলতি বছরে ৮৩ তম বর্ষে পদার্পণ করছে এই পুজো৷ দশকের পর দশক কেটে গেলেও এই পুজোর জনপ্রিয়তা এতোটুকুও ম্লান হয়নি। পুরানো প্রজন্ম থেকে নতুন প্রজন্ম সবার কাছেই গুরুত্ব রয়েছে চাতরা শীতলাতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসবের।
কেবল দুর্গাপুজোর মধ্যে এ কমিটির কাজ সীমাবদ্ধ নয়, সারা বছর ধরে নানান সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও তাঁরা জড়িত থাকে। যেমন গত বছর করোনাকালে কমিউনিটি কিচেনের মাধ্যমে বহু আর্তপীড়িত মানুষের মুখে তাঁরা খাবার তুলে দেয়। পুজোর প্রাক্কালে গত ২ রা অক্টোবর "ঘোড়ামারা শিশু আনন্দ আশ্রম"-এর অনাথ শিশুদের মুখে হাসি অম্লান রাখতে শারদোৎসবে তাদের হাতে পুজো কমিটির পক্ষ থেকে নতুন পোশাক তুলে দেওয়া হয়। তাদের জন্য বিশেষ ভোজনেরও ব্যবস্থা করা হয়।
নিখাদ সাবেকিয়ানার স্বাদ পেতে হলে যেতে হবে চাতরা শীতলাতলা সর্বজনীনের পুজোতে। এখানের প্রতিমা দর্শন করলে প্রাণ জুড়িয়ে যায় দর্শনার্থীদের। তাইতো প্রতি বছর দেবীদর্শন করতে হাজার হাজার মানুষ এখানে ভিড় করেন। প্রতিমার পাশাপাশি মণ্ডপও মানুষকে আকর্ষণ করে। সাবেকি মণ্ডপ হলেও সুন্দর করে যত্ন সহকারে তা সজ্জিত করা হয়৷
বিগত কয়েক বছর ধরে শ্রীরামপুর শহরের সেরা প্রতিমার তকমা পেয়ে আসছে এই পুজো। বিশিষ্ট মৃৎশিল্পী স্বপন পাল তৈরি করেছেন প্রতিমা। সমস্ত বিধিনিষেধ ও সরকারি নির্দেশিকা মান্য করেই আয়োজিত হচ্ছে এখানকার পুজো। দর্শনার্থীদের প্রতিমা দেখার সুবিধার জন্য বানানো হয়েছে খোলামেলা মণ্ডপ।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment