রং প্রকৃতির হাসি ধরা দেবে শোভাবাজার বড়তলা সার্বজনীন দুর্গাপুজোতে
উত্তর কলকাতার অন্যতম বনেদি এলাকা হলো শোভাবাজার। এখানকার প্রাচীন পুজোর মধ্যে যে পুজোগুলির নাম সবার প্রথমে উঠে আসে তা হলো 'শোভাবাজার বড়তলা সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি'। যে পুজো কমিটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বরেণ্য সব ব্যক্তিদের নাম। প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী রামকুমার চট্টোপাধ্যায়, প্রখ্যাত নজরুল সঙ্গীতশিল্পী বিমান মুখোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তি জড়িত ছিলেন এই পুজোর সঙ্গে। এমনকি বেণী মাধব শীলের পরিবারও যুক্ত এই পুজোর সাথে।
চলতি বছরে 'শোভাবাজার বড়তলা সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি'র পুজো ৯০ তম বর্ষে পদার্পণ করছে। এ বছর তাদের পুজোর থিমে থাকছে একটুকরো প্রকৃতির ছোঁয়া। শিল্পী ইন্দ্রজিৎ ও দেবব্রত'র হাত ধরে সেজে উঠছে পুরো মণ্ডপ। 'শোভাবাজার বড়তলা সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি'র পুজোর এ বছরের ভাবনা হলো 'রং প্রকৃতির হাসি'।
মানুষের জীবনে আনন্দের উৎস হলো উৎসব। যেটা না থাকলে এক মানুষ হয়তো অপর মানুষের সাথে মিলনযজ্ঞে মেতে ওঠার সুযোগটুকুও পেত না। উৎসব মানুষের চারপাশের অন্ধকারকে দূর করে। উৎসব মানেই এক রঙিন মুহূর্ত। রং ও আলোর এই মহোৎসবে সমস্ত মানুষকে খুশীর সন্ধান দেবে এখানকার মণ্ডপ। এমনিতেই মহামারির দুর্যোগ কাটিয়ে আমরা কিছুটা স্বস্তি পেলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থা এখনও ফেরেনি। দীর্ঘদিন আমরা গৃহবন্দী থাকার ফলে অস্বস্তির কালো মেঘ আমাদের গ্রাস করছে। সেই অস্বস্তির কালো মেঘ সরিয়ে রং ও প্রকৃতির অদ্ভুত মেলবন্ধনে সকলকে আবদ্ধ করতে চলেছে এই পুজো।
এই দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক মাধ্যমে রঙীন প্রকৃতিকে দেখানো হয়েছে। রঙীন গাছপালা, পশুপাখি, ফুল ও ফল, সমস্ত প্রাণীজগৎ এর উপস্থিতির প্রতীক। মণ্ডপে ব্যবহৃত হয়েছে একাধিক রং। একতার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে অসংখ্য প্রদীপ।
মণ্ডপের পাশাপাশি প্রতিমা ও আলোকসজ্জাতেও থাকছে নতুনত্ব। শিল্পী দীপঙ্কর পালের হাত ধরে তৈরি হয়েছে প্রতিমা৷ গত বছর পুজোতে হাইকোর্টের রায়ের জন্য অনেকে প্রতিমা দর্শন করতে না পেরে ভগ্ন হৃদয়ে ফিরে যান৷ এ বছরও যেহেতু হাইকোর্টের একই রায় দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল সেহেতু দর্শনার্থীরা যাতে বাইরে থেকেও প্রতিমা দর্শন করতে পারেন সেই ব্যবস্থাও থাকছে এই পুজোতে৷
শোভাবাজার বড়তলা সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির পুজো এই অসময়ে মানুষের হাসিমুখে বেঁচে থাকার আশ্বাস দেবে। একে অপরের মিলিত প্রচেষ্টাতেই যে এই সুন্দর প্রকৃতিকে রক্ষা করা সম্ভব সেই বার্তাও দেবে এই পুজো৷
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment