Header Ads

বছরে প্রায় ৬৫০ কোটির ব্যবসা হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং এর মাদুর শিল্প থেকে


পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের শিল্প। যা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মানুষকে বেশ স্বাবলম্বী করেছে। যেমন গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, শালবনী, ঘাটাল বিধানসভায় আলু কেন্দ্রীক শিল্প। রামজীবনপুরের কাঁসা শিল্প, সবং এর মাদুর শিল্প, কেষ্টপুরের তামার গহণা শিল্প, ছেড়ুয়ার আতশ বাজী, নয়া গ্রামের পটশিল্প ইত্যাদি। 


সবং বিধানসভার আড়াই লাখ মানুষের মধ্যে ৭৫০০০ জন মানুষ মাদুর শিল্পের সাথে যুক্ত। বছরে ৬০০ থেকে ৬৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হয় মাদুর শিল্প থেকে। প্রধানত তাঁতে বোনা মাদুরের জন্যই বিখ্যাত সবং।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি সুইডেনেও নাম কুড়িয়েছে সবং এর মাদুর। বর্তমানে প্লাস্টিকের দূষিত মাদুর এখানের মাদুর শিল্পে প্রভাব ফেলছে ২০০০ সাল থেকে। কিন্তু সরকারি ভাবে মাদুরকাঠির মাদুরকে সেভাবে ইনসেন্টিভাইজ বা আর্থিক ভাবে কিছুটা সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়নি।

একের পর এক মাদুর শিল্পী রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার পেয়েছেন সবং থেকে। যেমন ২০১৮ সালে তাপস কুমার জানা, ২০২১ সালে গৌরী দাস ও গৌরীবালা জানা। এখানের মাদুরের ওপর বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী, প্রাকৃতিক দৃশ্য, বাংলার উৎসব, বাঙালি মনীষীদের জীবন, হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতিনীতি বিভিন্ন বিষয় ইত্যাদি প্রতিফলিত হয়ে থাকে। যার জন্য এখানের মাদুর একটা অন্য মাত্রা পেয়েছে।

এই মাদুর শিল্পকে উন্নত করার জন্য ও আধুনিক ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ন্যাচারাল ফাইবার মিশন থেকে এখানকার ১৪০০০ শিল্পীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা হয়েছিল যদিও নামমাত্র অগ্রগতির পর তা আটকে যায়। বিভিন্ন সরকার লোক দেখানো কাজের নামে কিছু কিছু কাজ করলেও সেভাবে বড় মাপের কাজ হয়নি। দুই একটি সামাজিক সংস্থা কিছু শিল্পীকে সাহায্য করে সাফল্য পেয়েছে। লকডাউনের পর থেকে বিশ্ববাংলাও এখন আর এখানকার মাদুর নিচ্ছেনা। এখানের শিল্পীদের ঋণ দেওয়া, সাবসিডি দেওয়ারও সেভাবে ব্যবস্থা হয়নি।

হস্তশিল্প পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জি.আই. পেলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে জি.আই. তকমার ব্যবস্থা হয়নি। সবং এর মাদুরশিল্পের জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এর জন্য সমাজসেবী মানুষকে চেষ্টা করতে হবে। এই সমস্ত ইস্যু সমগ্র রাজ্যের ইস্যু হওয়া উচিত। প্রকৃত মানুষের আর্থিক উন্নতির জন্য সমগ্র রাজ্যের মানুষকে সচেতন হতে হবে। দলের ঊর্দ্ধে উঠে বাঙালি জাতির উন্নতির চিন্তা করতে হবে।

প্রতিবেদন- অমিত দে


No comments