পাকবিড়রার ঐতিহাসিক প্রান্তরে তৈরি হলো বঙ্গভুক্তি স্মারক
পৃথিবীর ইতিহাসে দীর্ঘতম ভাষা আন্দোলন হলো মানভূম ভাষা আন্দোলন। ১৯১২ সালে শুরু হয় এই আন্দোলন। পুরুলিয়াকে পশ্চিমবঙ্গে যুক্ত করার জন্য হাজার হাজার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে রক্তক্ষয়ী গণআন্দোলন শুরু করেন। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে পুরুলিয়ার মানুষদের লড়াই সেদিন সফল হয়েছিল৷ বাংলা ভাষার দাবিতে কলকাতার পথে মানভূমবাসীদের লং মার্চ কলকাতার হাওড়া ব্রীজ অতিক্রম করেছিল। এই আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানান সর্বস্তরের বাঙালিরা৷ ১৯৫৬ সালের ১ লা নভেম্বর পুরুলিয়া যুক্ত হয় পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে।
পুরুলিয়ার মানবাজারের পাকবিড়রার সেই প্রান্তর, যেখান থেকে অগণিত মানুষ মানভূমকে বিহার থেকে বিচ্ছিন্ন করে, বাংলা-বিহার যুক্তপ্রদেশ গঠনের বিরোধিতা করে, বঙ্গভুক্তির আন্দোলন করে কলকাতা পর্যন্ত পদযাত্রা করেন।
দীর্ঘকাল ধরে এই ভাষা আন্দোলন উপেক্ষিত ছিল৷ বর্তমান প্রজন্মের বহু বাঙালি জানেন না এই দিনটির সারমর্ম। পুরুলিয়া ভাষা আন্দোলনকে বারংবার স্মরণ করাতে পাকবিড়রার ঐতিহাসিক প্রান্তরে স্থায়ীভাবে তৈরি হলো পুরুলিয়া বঙ্গভুক্তি স্মারক। পুরুলিয়ার লাখরা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছে এই স্মারক।
আন্দোলন শুরু হওয়া সেই মাঠে ১লা নভেম্বর সারাদিন ধরে চলবে পুরুলিয়া বঙ্গভুক্তি দিবস উদযাপন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সেই আন্দোলনে পদাতিক বাহিনীর নেতৃত্বে থাকা নবতিপর ভাষাসৈনিক শ্রীযুক্ত কাজল সেন মহাশয়। পুরুলিয়া গঠনের পর এই প্রথমবার সেই পবিত্র স্থানে ভাষাদিবস উদযাপন হবে।
লাখরা গ্রাম পঞ্চায়েত আয়োজন করছে সমগ্র অনুষ্ঠানটি। শ্রী গৌতম দাসের হাত ধরে মানবাজারের পাকবিড়রার সেই ঐতিহাসিক মাঠে বঙ্গভুক্তি স্মারক নবরূপে গড়ে উঠেছে, মানভূম ভাষা আন্দোলনে যুক্ত ভাষাসৈনিকরা, গবেষকেরা একত্রিত হচ্ছেন।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment