হিমাচলের ফ্রেন্ডশিপ শৃঙ্গে সাফল্যের সঙ্গে আরোহন একদল বাঙালির
একদল বাঙালি সাফল্যের সঙ্গে আরোহন করলেন 'ফ্রেন্ডশিপ শৃঙ্গ'। সম্প্রতি হিমাচলের পীরপঞ্জাল রেঞ্জের ৫২৪৮ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট 'ফ্রেন্ডশিপ শৃঙ্গ' আরোহণ করে ফিরে এলো আসানসোলের 'মাউন্টেন লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন'-এর একটি পর্বতারোহী দল৷ দলের মোট তিনজন পর্বতারোহী শৃঙ্গে চড়ার জন্য রওনা দেন। ১৬ ই অক্টোবর শুরু হয়েছিল এই বিশেষ অ্যাডভেঞ্চারটি৷
বাঙালিকে দুর্বল ও ভীতু বলে যারা বাঙালিকে কোণঠাসা করতে চান তাদের উপযুক্ত জবাব দিলেন একদল বাঙালি পর্বতারোহী। একটা সময় ছিল যখন বাঙালি পর্বতারোহীরা কেবল এভারেস্টে চড়তেই বেশি পছন্দ করতেন কিন্তু এখন পরিবর্তন এসেছে সেই জায়গায়। বর্তমানে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পর্বত শৃঙ্গ আরোহন করতে বেরোচ্ছে বাঙালিরা।
মাউন্টেন লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে খবর, মোট এগারো জনের পর্বতারোহী দল যার মধ্যে ছিল ন'জন পুরুষ ও দু'জন মহিলা, তাঁরা ১৬ ই অক্টোবর রাতে হিমাচল প্রদেশ পাড়ি দেন৷ এরপর ২০ শে অক্টোবর তাঁরা সোলাং থেকে ধুণ্ডি হয়ে ৩,৮৪০ মিটার উঁচুতে 'ফ্রেন্ডশিপ পিক'-এর বেসক্যাম্প লেডি লেগে পৌঁছান৷ ২১ শে অক্টোবর বিকেল তিনটে নাগাদ এগারো জনই ৪,৩০০ মিটার উচ্চতায় অ্যাডভান্স বেসক্যাম্প'-এ পৌঁছান। ঐ দলের প্রবীণ পর্বতারোহী মৃণাল সরকারের মতে, সেদিন রাত ১১ টার সময় তাঁরা চূড়ার দিকে রওনা দিয়েছিলেন। তবে বেশ কিছুটা এগোতেই শরীর সাই দিচ্ছিল না৷ যার জন্য ছ'জন আবার অ্যাডভান্স বেসক্যাম্প প্রত্যাবর্তন করেন। একই কারণে মৃণাল ও মুকেশ দত্তও শৃঙ্গের প্রায় ১০০ মিটার নীচ থেকে ফিরে আসেন। দলনেতা তথা সংগঠনের সম্পাদক অভিজিৎ রায়, সহ-দলনেতা মিলন চট্টোপাধ্যায় ও অর্ঘ্য ঘোষ ২২ শে অক্টোবর সকাল নটা বেজে কুড়ি মিনিট নাগাদ শৃঙ্গে আরোহন করেন। এরপর বিকেল পাঁচটায় তাঁরা সকলে অ্যাডভান্স বেসক্যাম্প হয়ে বেস ক্যাম্পে ফিরে আসেন।
অ্যাডভেঞ্চার শেষ করে ২৩ শে অক্টোবর তাদের বেসক্যাম্পে থাকার কথা ছিল৷ কিন্তু তাঁরা সোলাং-এ খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাস পান। তাঁরা জানতে পারেন ২৩ শে অক্টোবর ও ২৪ শে অক্টোবর আবহাওয়া প্রতিকূল হয়ে উঠবে। তাই বেসক্যাম্পে না কাটিয়ে তাঁরা দ্রুত চূড়ার দিকে চলে যান। ২৩ শে অক্টোবর সোলাং-এ ফেরার সময় থেকেই আবহাওয়া খারাপ হতে আরম্ভ করে। প্রচণ্ড বৃষ্টি ও তুষারপাতের জন্য তাঁদের ২৪ শে অক্টোবর সোলাং-এ কাটাতে হয়। অবশেষে ২৮ শে অক্টোবর সকালে তাঁরা কালকা মেলে আসানসোল ফিরে আসেন।
এই সাফল্যের নেপথ্যে আবহাওয়ার নিঁখুত পূর্বাভাস ও সঠিক পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলে মনে করছেন এভারেস্টে আরোহন করা পর্বতারোহী শেখ সাহাবুদ্দিন।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment