লকডাউনে চরম আর্থিক সংকটে দিন কাটছে নদীয়ার ঝুড়ি শিল্পীদের
লকডাউনে স্তব্ধ জনজীবন। বিগত দু'বছর ধরে চলা কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউনের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শ্রমজীবী পরিবারের মানুষদের। বহু শ্রমজীবী মানুষ লকডাউনে কর্মহীনও হয়ে পড়েছেন। আর্থিক সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য তারা হাজার প্রচেষ্টা চালালেও পদে পদে ব্যর্থ হতে হচ্ছে তাদের।
নদীয়ার করিমপুর, বেতাই ও শান্তিপুর ব্লক সহ বিভিন্ন এলাকার বহু মানুষ ঝুড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। যারা বাঁশ চিরে তার চাঁছাড়ি দিয়ে বানান নানান ধরণের ঝুড়ি। এই ঝুড়ির একাংশ আমের মরসুমে আম বাগানে ব্যবহৃত হয়। হাঁস, মুরগীর খাঁচাও বানান তারা এই বাঁশের চাঁছাড়ি দিয়ে।
করিমপুর, বেতাই ও গোবিন্দপুর এলাকার ঝুড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি পরিবারের লোকজন পূর্বপুরুষদের সময় থেকেই ঝুড়ি বানিয়ে আসছেন। বাংলার অন্যতম কুটির শিল্প হলো ঝুড়ি শিল্প। কোভিড পরিস্থিতির কারণে ঝুড়ি শিল্পীদের আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে দিন কাটছে। ঝুড়ি শিল্পীদের এখন পর্যন্ত কোনোদিনই এতোটা ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি৷
বছর দুয়েক আগে যেখানে ঝুড়ি ৫০ থেকে ৬০ টাকা মূল্যে বিক্রি হয়েছে এখন সেখানে ৪০ টাকাতেও লোকে ঝুড়ি নিতে চাইছেন না৷ লোকজন যে দামে ঝুড়ি নিচ্ছেন তাতে বাঁশের দামটুকুও উঠবে না বলে মনে করছেন ঝুড়ি শিল্পীরা। নতুন করে ঝুড়ি শিল্প কিছুতেই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। ঝুড়িশিল্পীদের চোখে শুধুই অন্ধকার নেমে আসছে৷ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রেশনের চালে কোনোরকমে জীবন চলছে তাদের আপাতত।
তাদের হাড়খাঁটুনি পরিশ্রম করার প্রচণ্ড ক্ষমতা থাকলেও চাহিদার অভাবে সংকটের মুখে পড়তে হচ্ছে। এখনকার প্রচুর শিক্ষিত ছেলেমেয়েরাও যুক্ত ঝুড়ি শিল্পের সঙ্গে। ঝুড়িশিল্পীদের আক্ষেপ তাদের জন্য নেই কোনো সরকারি সুযোগ সুবিধা। ভোট আসে, ভোট যায়৷ প্রতিশ্রুতির বন্যাও বয়ে যায় কিন্তু তাদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়না।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment