বাইকে মাত্র পাঁচদিনে কন্যাকুমারী থেকে খারদুং লা পৌঁছে লক্ষ্যপূরণ এক বাঙালির
বাঙালিরা দুর্বল। বাঙালিরা শারীরিক পরিশ্রম করতে পারে না। বাঙালিরা ভীতু..... এরকম অনেক মন্দ কথায় বাঙালির প্রসঙ্গে বলা হয়ে থাকে। যদিও তা সম্পূর্ণ ভুল কথা৷ বাঙালির প্রসঙ্গে প্রচলিত এই মিথকে আবারো ভেঙ্গে দিলেন এক বাঙালি। মোটরবাইকে মাত্র পাঁচ দিনে কন্যাকুমারী থেকে খারদুং লা পৌঁছলেন বঙ্গসন্তান শিবালিক মুখোপাধ্যায়। খারদুং লা থেকে তিনি মোটরবাইকে এবার কলকাতা ফিরবেন। প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীদের রক্ষার বার্তা দিতেই এই বিশেষ অ্যাডভেঞ্চার করেন তিনি।
কন্যাকুমারী থেকে লাদাখের খারদুং লা, দূরত্ব প্রায় ৪০০০ মাইল। এতোটা পথ পাঁচদিনে অতিক্রম করা যথেষ্ট কঠিন থেকে কঠিনতর কাজ। অথচ শিবালিক বাবু এই কঠিনতর কাজকে সহজেই জয় করে নিয়েছেন। তিনি প্রতিদিন গড়ে ৮০০ মাইলের মতো পথ মোটরবাইকে অতিক্রম করেছেন। এককথায় অবর্ণনীয় রেকর্ড তৈরি করে ফেললেন তিনি। এমন দুঃসাহসিক অ্যাডভেঞ্চার এই প্রথমবারই নয়, বছর দুই আগে তিনি স্কুটার চালিয়ে ৩৪ দিনে গোটা দেশ চষে বেড়িয়েছিলেন।
শিবালিক মুখোপাধ্যায় লেক টাউনের বাঙুরের বাসিন্দা। তাঁর বয়স বর্তমানে চৌত্রিশ। তিনি পেশায় ম্যাক্সিলোফেশিয়াল শল্য চিকিৎসক। শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। বাইক চালানো তাঁর একপ্রকার নেশা। লোকে তাঁকে যীশু নামেই বেশি ডাকে। আসলে যীশু হলো তাঁর ডাক নাম। ২০১৯ সালে স্কুটারে ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তিনি৷ আর এবার কলকাতা থেকে কন্যাকুমারী হয়ে খারদুং লা পৌঁছলেন তিনি৷
গত ২২ শে আগস্ট কলকাতা থেকে কন্যাকুমারীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। বিশাখাপত্তনম হয়ে কন্যাকুমারী পৌঁছে সেখান থেকে ২৬ শে আগস্ট যাত্রা শুরু করেন খারদুং লা-র পথে। ২০১৯ সালে স্কুটারে ভারত ভ্রমণের পরই তাঁর লক্ষ্য ছিল কন্যাকুমারী থেকে বাইকে খারদুং লা পাড়ি দেওয়া। তাঁর সেই লক্ষ্য অবশেষে পূরণ হলো। এখন মনের আনন্দে শুধু তাঁর ঘরে ফেরার পালা।
এর আগে অনেকেই কন্যাকুমারী থেকে লাদাখ গিয়েছেন৷ অনেকে উত্তর থেকে দক্ষিণে এসেছেন। অথচ কন্যাকুমারী থেকে খারদুং লা যাওয়ার খবর এখনও পর্যন্ত শোনা যায়নি। শিবালিক মুখোপাধ্যায়ই সম্ভবত প্রথম ব্যক্তি যিনি বাইকে কন্যাকুমারী থেকে দুর্গম খারদুং লা পৌঁছলেন। তিনি সবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন যে বাঙালি মোটেও দুর্বল নয়৷
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment