কমনওয়েলথ স্কলারশিপ সম্মান হাতে উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড পাড়ি এক বঙ্গতনয়ার
উচ্চশিক্ষায় বাঙালি কখনো পিছিয়ে থাকে না। উচ্চশিক্ষার জন্য বাঙালিরা পাড়ি দিয়ে থাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সম্প্রতি কমনওয়েলথ স্কলারশিপ সম্মান হাতে নিয়ে এক বাঙালি মেয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দিতে চলেছেন ইংল্যান্ডে। কালিয়াচকের মেয়ে আলিশা ইবকার কমনওয়েলথ স্কলারশিপের জন্য মনোনীত হয়ে ইংল্যান্ড পাড়ি দেবেন। ইংল্যান্ডের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য মনোনীত হয়েছেন তিনি। চলতি মাসেই বাংলা ও বাঙালির মুখ উজ্জ্বল করতে ইংল্যান্ডে রওনা হবেন তিনি৷
যুক্তরাজ্যের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বের সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়। ইংল্যান্ডের কভেন্ট্রি শহরের উপকণ্ঠে ভিত্তি করে এই বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬৫ সালে স্থাপিত হয়৷ অ্যাকাডেমিকভাবে, বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণার প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার জন্যও পরিচিত। ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ৩০ টি অ্যাকাডেমিক বিভাগ মেইনটেইন করে, চারটি অনুষদে সংগঠিত : চারুকলা, মেডিসিন, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ কিলোমিটারেরও বেশি দৈর্ঘ্যের পান্ডুলিপি নিয়ে একটি বিশাল গ্রন্থাগার রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ক্যাম্পাসগুলি স্যাটেলাইট সাইটেও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
ব্রিটিশ সরকার প্রত্যেক বছর বিভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রায় ৮০০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে থাকে। এ বছরও তাঁরা কমনওয়েলথ ভুক্ত বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৮০০ জনকে বাছাই করেছে। এই ৮০০ জন উত্তীর্ণদের মধ্যে অন্যতম মালদার আলিশা ইবকার। তাঁর বাড়ি কালিয়াচকের নয়াগ্রামে।
আলিশা ইবকার বর্তমানে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপিকা হিসেবে কর্মরত৷ ২০১৬ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। তাঁর বেড়ে ওঠা এক শিক্ষিত পরিবারে। তাঁর বাবা হাজেরুল ইবকার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। তাঁর মা তানিয়া রহমত একজন স্কুল শিক্ষিকা। তাঁর বোন আলিফিয়া ইবকার কলকাতা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করে দিল্লির এক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। ফারাক্কা ডিপিএস স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি৷
একাদশ শ্রেণিতে তিনি ভর্তি হন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেও একের পর এক সাফল্য অর্জন করেন তিনি৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ছাত্রী হিসেবে তিনি 'পাপা মিঁয়া পদ্মভূষণ' উপাধিতে ভূষিত হন। দেশ-বিদেশে দক্ষ বক্তা ও লেখিকা হিসেবেও নজর কেড়েছেন তিনি৷ মালয়েশিয়াতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে সেরা বক্তা হিসেবে সম্মানিত হন তিনি৷
কমনওয়েলথ স্কলারশিপের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হওয়া মোটেও সহজ কথা নয়। কিন্তু আলিশা তাঁর মেধার জোরে সফল হলেন। এই অভূতপূর্ব সাফল্যের প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "আমি কমনওয়েলথ শেয়ার্ড স্কলারশিপে মনোনীত হয়ে খুশি। এই সম্মান আমাকে আরও এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে। এতে আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। মানুষের একাংশের মধ্যে যে ভেদাভেদ- বৈষম্য - বিদ্বেষ তৈরি হয় সেগুলির বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করা ও সমাধানের পথ তৈরি করাই আমার গবেষণার লক্ষ্য।"
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment