Header Ads

বিশ্বভারতীর উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বোলপুরে বিক্ষোভ মিছিলে সামিল হলো বাংলা পক্ষ


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে গড়া বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের কবলে পড়ে বিশ্বভারতীতে বিভিন্ন ভাবে আজকাল বাংলা ভাষাকে ব্রাত্য করা হচ্ছে। তার খবরও প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী প্রচণ্ড স্বৈরাচারী শাসন চালাচ্ছেন। তার আচরণ ও ব্যবহারে মোটেও সন্তুষ্ট নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অকারণে তিন বাঙালি পড়ুয়াকে সম্প্রতি সাসপেন্ড করে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে টানাটানি করছেন।  


বিশ্বভারতীর উপাচার্যের হেন আচরণের প্রতিবাদে সরব ভারতে বাঙালির জাতীয় সংগঠন 'বাংলা পক্ষ'। গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর বিশ্বভারতীর উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পথে নামলো বাংলা পক্ষ। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এদিন দুপুরে বোলপুর চৌমাথা মোড় থেকে ফায়ার ব্রিগেড মোড় পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ মিছিল করলো বাংলা পক্ষ। 

বীরভূম সহ পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, মালদা, মুর্শিদাবাদ থেকে দলে দলে সহযোদ্ধারা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন৷ উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায়, শীর্ষ পরিষদের সদস্য কৌশিক মাইতি, অমিত সেন, কালাচাঁদ চট্টোপাধ্যায়, সম্রাট কর, পশ্চিম বর্ধমান জেলা বাংলা পক্ষের সম্পাদক অক্ষয় বন্দোপাধ্যায়, মুর্শিদাবাদ জেলা বাংলা পক্ষের সম্পাদক কৌশিক চট্টোপাধ্যায়, মালদা বাংলা পক্ষের রফিক আহমেদ, পূর্ব বর্ধমান জেলা বাংলা পক্ষের সম্পাদক জুয়েল মল্লিক এবং বীরভূম জেলা থেকে মাশকুল ইসলাম শিবলি, উদয় মন্ডল, আজহার বাবু, রামকৃষ্ণ সাহা, আবদুল তাজিম মন্ডল, কমলেশ তালুকদার সহ শতাধিক সহযোদ্ধারা।

বাংলা পক্ষের অভিযোগ, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বাংলা ও বাঙালির শত্রু, হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের দালাল। পশ্চিমবঙ্গে থেকেই ক্রমাগত বাঙালি বিরোধী  ষড়যন্ত্র করা, বাঙালি ছাত্র-ছাত্রী এবং অধ্যাপকদের সাসপেন্ড এবং বহিস্কার করার জঘন্য খেলা খেলছেন তিনি।

এছাড়াও সর্বক্ষেত্রে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদীদের আধিপত্য, হিন্দিভাষী কর্মী ও অধ্যাপক নিয়োগ করে বিশ্বভারতীর কর্মী ও অধ্যাপকদের পদগুলিকে বাঙালি শূন্য করার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সামিল হয় বাংলা পক্ষ। ভূমিপুত্রদের কর্মসংস্থান ক্রমশ লোপ পাচ্ছে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদীদের কারণে। এমতাবস্থায় বিশ্ববিখ্যাত পৌষ মেলা বন্ধ করে খেটে খাওয়া মানুষদের জীবিকাহীন করার চক্রান্তের বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলেছে বাংলা পক্ষ।   

বাংলা পক্ষের সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বিশ্বভারতী দিল্লিতে না, বিহারে না, গুজরাটে না, রাজস্থানে না, বিশ্বভারতী বাংলায়। বিশ্বভারতী বাঙালির। দিল্লির হাত থেকে মুক্ত করে বাংলা ও বাঙালির কাছে হস্তান্তর করার লড়াইয়ের নাম বাংলা পক্ষ। বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক, কর্মচারী ও আশ্রমিকদের পাশে আছে বাংলা পক্ষ। অবিলম্বে উপাচার্য পদত্যাগ না করলে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করা হবে। দিল্লির দালাল উপাচার্য ও তার টিমকে কিন্তু বাংলার ৯ কোটি বাঙালি ঘিরে আছে।" 

বাংলা পক্ষের শীর্ষ পরিষদের সদস্য কৌশিক মাইতি বলেন, "বিশ্বভারতী দিল্লি তৈরি করেনি যে দিল্লির নেতার ইচ্ছামতো এই প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করবে। বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে তৈরি। বাংলার মানুষের প্রাণের সম্পদ। এখানকার উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদীদের ঘাঁটি বানিয়েছেন। এখানে পড়াশুনা  হচ্ছে না, পৌষ মেলা হচ্ছে না বাকি সব চলছে৷ আর এর কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁর ওপর নেমে আসছে শাস্তির খাড়া৷ তিন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, অধ্যাপকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। যারা রবীন্দ্রনাথকে চেনেন না, জানেন না, এক লাইন রবীন্দ্রনাথের লেখা পড়েননি উত্তরপ্রদেশ থেকে তেমন মানুষ এনে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক করা হচ্ছে। আমরা বাংলা পক্ষ উপাচার্যের এই স্বৈরাচার মানবো না৷ আমরা চাই বিশ্বভারতীতে প্রাণ ফিরুক, তিন পড়ুয়া আবার ক্লাসে প্রবেশ করুক আর অধ্যাপকরা তাঁদের প্রাপ্য সম্মান ফিরে পাক।" 

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা


No comments