সংস্কারের পথে বিদ্যাসাগরের স্মৃতিবিজড়িত মাটির বাড়ি
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান বীরসিংহ। ঐতিহাসিক এই গ্রামের নাম সকল বাঙালিই জানেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর না থাকলে হয়তো বীরসিংহ গ্রামের কথা কেউ-ই জানতে পারতো না৷ বীরসিংহ গ্রাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান হওয়া সত্ত্বেও এখানে বিদ্যাসাগরের স্মৃতিচিহ্ন বলতে বেঁচে রয়েছে দু'টো দোতলা মাটির বাড়ি। যার একটি বাড়িতে ভগবতী বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ছিল৷ বহুকাল আগে দরিদ্র ছাত্ররা এখানে পড়াশুনা করতো৷ পরবর্তীকালে যখন পাকা ছাত্রাবাস গড়ে ওঠে তখন থেকেই মাটির বাড়িটি খালিই পড়ে রয়েছে।
বাড়ি দু'টিকে বহুদিন আগেই হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছিল, তবে সেগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি৷ তাই বাড়ি দু'টিকে নতুন সাজে সুসজ্জিত করার পরিকল্পনাও করে ফেলেছে রাজ্যের প্রশাসন। জানা যাচ্ছে, কয়েকদিনের মধ্যেই মাটির বাড়ি দুটিকে সংস্কারের কাজ আরম্ভ করা হবে।
বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতবছরই বীরসিংহের এই বাড়ি দুটো সংস্কারের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হলেও নানান জটিলতার কারণে কাজ থমকে গিয়েছিল। হেরিটেজ ভবন হিসেবে চিহ্নিত এই দু'টি মাটির বাড়ির সংস্কার ছাড়াও আশেপাশের ফাঁকা জমিতে শান্তিনিকেতনের আদলে তৈরি হবে আম্রকুঞ্জ৷ পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠবে পান্থনিবাস। ভগবতী বিদ্যালয়ের পুরানো ভবনটিরও আমূল সংস্কার করা হবে।
বীরসিংহ গ্রামকে ঘিরে এভাবেই বাংলার এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা যেতে পারে। বাংলার যে সকল মহাপুরুষ সমাজের মঙ্গলের জন্য কাজকর্ম করে গেছেন তাদের সম্মান জানাতে এরকম উদ্যোগ বাংলার প্রত্যেক প্রান্তে নেওয়া উচিৎ। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে বাঙালির ইতিহাস সঠিকভাবে জানতে পারে তারও ব্যবস্থা করা উচিৎ রাজ্যের প্রশাসনকে।
বিশেষ সূত্র থেকে জানা গেছে, পূর্ত দপ্তর প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে থাকলেও পুরো কাজটা হবে হেরিটেজ কমিশনের তত্ত্বাবধানে। হেরিটেজের নিয়ম মেনে বাড়ি দু'টি সম্পূর্ণ অবিকৃত রেখেই সংস্কারের কাজ হবে। কাজ করবেন বীরসিংহের স্থানীয় শ্রমিকরাই।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment