Header Ads

সবুজের বার্তা নিয়ে সাইকেলে দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় প্রচার চালাবেন তারকবাবুরা


বর্তমানে গোটা পৃথিবীতে ক্লাইমেট চেঞ্জিং বা জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন যার অন্যতম কারণ। মানুষের অসচেতনতা ও পরিবেশের প্রতি দায়িত্বহীনতা আজকে পৃথিবীকে এক ভয়ঙ্কর অবস্থার সম্মুখীন করেছে। তাই পরিবেশ রক্ষার জন্য একের পর এক উদ্যোগ নিচ্ছে দ্য গ্লোবাল গ্রিন ফোর্স। সমগ্র পৃথিবীকে সবুজ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তৈরি হয়েছে এই পরিবেশ সংগঠনটি। সবুজায়ন ও সবুজ বাঁচানোর জন্য তাঁরা সংকল্পবদ্ধ। 


পরিবেশ সচেতনতা প্রসারের জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গন্ডার বন্ধু সুহান মল্লিক এবং আসাম সরকারের বনদপ্তরের আমন্ত্রণে গন্ডার সংরক্ষণের বার্তা নিয়ে সাইকেলে আসামের কাজিরাঙা যান দ্য গ্লোবাল গ্রিন ফোর্সের সাতজন পরিবেশ কর্মী। এনারা হলেন উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়া ভূতবাগানের বাসিন্দা তারক চন্দ্র পাল, হুগলির পুড়শুড়ার বাসিন্দা উজ্জ্বল ঘোষ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুভাষগ্রামের বাসিন্দা রামপ্রসাদ নস্কর, বাঁকুড়ার ইন্দপুরের কলামি কচুইপালের বাসিন্দা আকাশ সিংহ মহাপাত্র, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের বাসিন্দা মাধবী সরকার এবং হাওড়ার বাগনান থেকে গুরুপদ চক্রবর্তী। আসাম সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের অভ্যর্থনাও জানানো হয়।

দ্য গ্লোবাল গ্রিন ফোর্সের সভাপতি তারক চন্দ্র পাল আগামী ১ লা সেপ্টেম্বর পরিবেশ সচেতনতা প্রসারের জন্য নদীয়া, বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা প্রভৃতি জেলাগুলিতে সাইকেল যাত্রা শুরু করবেন তিনি। যাত্রাপথে স্থানীয় জনগণ এবং বিভিন্ন সংগঠন তাঁদের প্রচার অভিযান চালাবেন। এছাড়াও যাত্রাপথের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হবে গাছ। এরই সঙ্গে সঙ্গে পলিথিন ব্যাগ বর্জন, জল সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণী সুরক্ষা ও জলাভূমি রক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে প্রচার অভিযান করবেন তাঁরা। ‌

তারকবাবু কেবল একা নন, তাঁর যাত্রাপথে সঙ্গী হবেন নৈহাটির বাসিন্দা অর্পিতা মণ্ডল ও বাঁকুড়ার ইন্দপুরের কলামি কচুইপালের বাসিন্দা আকাশ সিংহ মহাপাত্র। তারকবাবু কাজিরাঙা যাওয়ার পূর্বেই সমগ্র ভারতজুড়ে সাইকেলে করে পরিবেশ রক্ষার প্রচার অভিযান চালিয়েছিলেন। ‌২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত এ অভিযান চলেছিল তার। যে অভিযান শেষ করার পরও তিনি ঝাড়খন্ড ও ওড়িশায় প্রচার অভিযান চালিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য সাইকেলে ভারত ভ্রমণে বেরিয়ে পড়বেন। দ্বিতীয়বার ভারত ভ্রমণের পাঠ সাঙ্গ করে ২০২৩ সাল নাগাদ তিনি সাইকেলে বিশ্বভ্রমণে সামিল হবেন।  

তারক চন্দ্র পাল লিটারেসি প্যারাডাইসকে বলেন, "আমরা বাবা ও মা প্রত্যেককেই ভালোবাসি। তাই বাবা ও মায়ের নামে দুটি করে গাছ লাগান। বাবা-মা পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও, সেই গাছ দুটি থেকে যাবে পৃথিবীতে। ‌তাঁর ছায়ার তলায় যখন বসবেন, তখন মনে হবে বাবা ও মা আপনার মাথার উপর আছে। আপনি মানসিকভাবে ভীষণ আনন্দ পাবেন। ‌সন্তান-সন্ততির জন্মদিনে তাঁদের নামে গাছ লাগান। এছাড়াও যিনি আপনাকে ভালোবাসেন না, তাঁর নামে গাছ লাগান, দেখবেন একদিন তাঁর কাছ থেকেই আপনি ভালোবাসা পাবেন।"

তারকবাবুদের গাছ লাগানোর এ নব্য পন্থা সমাজকে এক মানবিক বার্তা দেয়। এভাবে বৃক্ষ রোপণ করলে আমাদের পরমায়ুও বৃদ্ধি পাবে। জন্মিলে মরিতে হবে এ কথা তো সত্যি তবুও মানুষের মনে সবুজ পৃথিবীকে আরো কয়েকটা বছর দেখার বাসনা জাগে। সবুজ পৃথিবী থেকে সবুজ হারিয়ে গেলে যতদিন যাবে ততদিন মানুষের আয়ু কমে আসবে। অতএব সবুজ বাঁচাতে উদ্যোগী হতে হবে সকলকে। পরিবেশ রক্ষার বার্তাও বিশ্বজুড়ে প্রচার করতে হবে। তারকবাবুরা নিজেদের মতো যতটুকু পারছেন সাইকেলে নানান জায়গা চষে বেড়িয়ে গাছ লাগিয়ে সবুজ বাঁচানোর ডাক দিচ্ছেন। 

তিনি আরো বলেন, "এভাবে যদি আমরা গাছ লাগাই, আমরা একদিন সবুজ পৃথিবীকে নতুন রূপে দেখবো। ‌দূষণমুক্ত পৃথিবী দেখবো। ভবিষ্যৎ প্রজন্মও পৃথিবীতে মুক্তির স্বাদ পাবে।"

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments