Header Ads

বাংলা বইয়ের জগতে নবজাগরণ ঘটাচ্ছে রনি ও তীর্থরাজের অনলাইন মার্কেটপ্লেস 'বইটই'


"বাঙালির দ্বারা নাকি ব্যবসা হয় না"- এই মিথকে ভেঙে ফেলছেন এম.বি.এ পাঠরত দুই যুবক রনি মন্ডল ও তীর্থরাজ ভট্টাচার্য্য। তারা দেখিয়েছেন স্বল্প পুঁজি হাতে নিয়েও ব্যবসা করা যায় এবং তা থেকে ধীরে ধীরে একটা জায়গাতেও পৌঁছানো যায়। ২০১৮ সালে তাদের তৈরি 'বইটই' www.boitoi.in আজ গোটা বিশ্বের বাংলা বইপ্রেমীদের কাছে পরিচিত নাম।  


'বইটই' হলো একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেখানে প্রকাশক থেকে বই বিক্রেতারা নিজস্ব স্টোর তৈরি করে তালিকা করতে পারেন বই। বইয়ের অর্ডার এলে বইটই উক্ত বিক্রেতার নথীভুক্ত ঠিকানায় অ্যারেঞ্জ করেন ক্যুরিয়ার পিক আপ ও তারপর বই পৌঁছে যায় পাঠকের ঠিকানায়। বইয়ের স্বল্প পরিমাণ চার্জ দিয়ে করোনাকালে এহেন অভূতপূর্ব ব্যবস্থায় খুশি বই বিক্রেতারা।  

বাংলা বইয়ের জগতে বাজারে বহু অনলাইন মার্কেটপ্লেস আছে কিন্তু বইটই অল্প সময়ে যা করে দেখাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। বাংলার অন্যান্য সকল অনলাইন মার্কেটপ্লেসের থেকেও উন্নতমানের পরিষেবা প্রদান করে থাকে বইটই। জনপ্রিয়তার শীর্ষেও এখন ভাসছে বইটই-এর নাম। প্রতিষ্ঠার জন্মলগ্ন থেকেই সবার মুখে মুখে বইটই-এর নাম ঘুরতে থাকে। যত দিন যাচ্ছে ততই বইটই-এর রেভিনিউ দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে। 

গল্প, উপন্যাস, কবিতা, জীবনকথা, পরীক্ষা প্রস্তুতি ও শিক্ষামূলক প্রায় সব ধরণের বইয়ের আঁতুড়ঘর বইটই। বই ছাড়াও বইটই থেকে পাওয়া যায় টি-শার্ট, মার্চেন্ডাইজ ও বিভিন্ন ক্র্যাফ্টস্। ২০১৯ সালে সংস্থার রেজিস্ট্রেশনের পর থেকে দেশের বাইরে এখনও অবধি ৫০ টির ওপর বইয়ের শিপমেন্ট ডেলিভার করেছে বইটই। তীর্থরাজ ও রনিদের বইটই খুলতে গিয়ে প্রথমদিকে  নানান কটুক্তিও শুনতে হয়েছে যেমন "ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে বই বিক্রি করছিস"। যদিও সেইসব কটুক্তিকে গুরুত্ব না দিয়ে বইটইয়ের উন্নতির জন্য তারা কাজ করে  গেছেন। বইটইকে উপর থেকে দেখলে মনে হবে ছোটো-খাটো স্টার্টআপ কিন্তু আসলে বইটই বাংলা বইয়ের জগতে একটা রূপকথা। অনলাইন মার্কেটপ্লেস বর্তমান  যুগে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ব্যবসা। বইকে ঘিরে ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে অনলাইন মার্কেটপ্লেসের ওপর ভিত্তি করে হাজার হাজার নামকরা কোম্পানি তৈরি হয়েছে। বইটই সেই গোত্রের মধ্যেই পড়ছে। 

রনি মন্ডল ও তীর্থরাজ ভট্টাচার্য্য ছাড়াও অজিত ঠাকুর, কুনাল চক্রবর্তী ও রিতিকা ভড়ের মতো তরুণ-তরুণী নিয়ে গঠিত টিম বইটই বাংলা বইজগতে নবজাগরণ ঘটাচ্ছে। বইটই বিভিন্ন সময়ে ছোটো রাশির লোন প্রদান করে প্রয়োজনের সময় ছায়াবৃক্ষের মতো পাশেও দাঁড়াচ্ছে ক্ষুদ্র বই ব্যবসায়ীদের। রনি ও তীর্থরা নিজেদের সততা ও মানবিকতাকে কাজে লাগিয়ে বইটইকে ঘিরে নানান স্বপ্ন দেখছেন। বইটই একদিন এক বৃহত্তর ব্র্যান্ড হবে, বহু মানুষের  কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে-- এই আশাকে ঘিরেও বুক বেঁধেছেন তারা। সেইদিন হয়তো খুব বেশি দূরে নেই। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া 'বই কিনতে বইটই' স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে। 

বইটই-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার রনি মন্ডল লিটারেসি প্যারাডাইসকে বলেন, "বই ব্যবসার যে হাল যেভাবে সব ডিজিটালাইজড হয়ে যাচ্ছে তাতে করে দোকান দোকান ঘুরে বই কেনার থেকে বইও লোকে অনলাইনে কিনতে পছন্দ করছেন। আমরা প্রথম থেকেই চেষ্টা চালাচ্ছি ভালো ছাড়ে ও নূন্যতম ডেলিভারি চার্জে সকলের কাছে পছন্দের বইগুলো পৌঁছে দেওয়ার। এবার আস্তে আস্তে ই-বুক, বইটই-এর নিজস্ব পাবলিকেশন সহ বিভিন্ন দিকে আমরা অগ্রসর হবো।" 

বইটই-এর চিফ অপারেটিং অফিসার তীর্থরাজ ভট্টাচার্য্যও লিটারেসি প্যারাডাইসকে বলেন, "উদাহরণ হয়ে বেঁচে থাকতে তো সবারই ভালো লাগে। বইটই তৈরি করবে এমন সব উদাহরণ যেগুলো পথ দেখাবে আগামীর উদ্যোগীদের। বিভিন্ন মল, এয়ারপোর্টের মতো জায়গায় বইটই-এর স্টল বানানোর ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। বই সহ বিভিন্ন জিনিস পাওয়া যাবে সেসব স্টলে।"

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments