Header Ads

জিআই ট্যাগ পাচ্ছে কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্য সরভাজা ও সরপুরিয়া


মিষ্টির আমি, মিষ্টির তুমি, মিষ্টি দিয়ে চেনা যায় বাংলাকে। পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন জেলা বিভিন্ন মিষ্টির জন্য বিখ্যাত। কোন মিষ্টি কোন জেলাতে বিখ্যাত আমরা তা সকলেই জানি। তাই আলাদা করে তার আলোচনা না করলেও চলে। বাঙালির কাছে রসগোল্লা তার প্রিয় মিষ্টান্ন হলেও বাঙালিরা অন্যান্য মিষ্টি খেতেও বেশ ভালোবাসে। সরভাজা ও সরপুরিয়া প্রায় সকল বাঙালিই খেয়েছেন৷ সরভাজা ও সরপুরিয়ার জন্য বিখ্যাত নদিয়ার কৃষ্ণনগর। এই দুই মিষ্টি এবার অর্জন করতে চলেছে জিআই ট্যাগ৷ 


সরভাজা ও সরপুরিয়ার নানান ইতিহাস ছড়িয়ে আছে। যেমন কথিত রয়েছে, মাছির ঝাঁক যখন ঘিরে ধরত অধরচন্দ্র দাসের বাড়ি। তখন কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়া ও সরভাজা তৈরি হচ্ছিল তাঁর সেই ঘরে। একশো বছর আগের কথা। তখনই এই মিষ্টিকে ঘিরে কৃষ্ণনগরের আরও একটি পরিচয় তৈরি হচ্ছিল ধীরে ধীরে। তারপর সেই মিষ্টি সত্যিই কৃষ্ণনগরের বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে। মাটির পুতুল, জগদ্ধাত্রী পুজো, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের পরিবারের কথার সঙ্গে সঙ্গে নাকি সরপুরিয়া, সরভাজার কথাও ছড়িয়ে পড়েছিল৷ কেউ কেউ বলেন সরপুরিয়া ও সরভাজা কৃষ্ণনগরে নাকি ৫০০ বছর আগে তৈরি হয়েছিল। যাইহোক, তর্ক-বিতর্ককে দূরে সরিয়ে সরভাজা ও সরপুরিয়া পাচ্ছে তার ভৌগোলিক সম্মান। 

চার বছর আগে সরভাজা ও সরপুরিয়ার জন্য জিআই ট্যাগের আবেদন করেছিলেন কৃষ্ণনগরের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা। তবুও সেই ট্যাগ পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হলো তাদের৷ যে কারণে সময় বেশি লাগছে তা হলো কৃষ্ণনগরের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের সংগঠনের কোনো রেজিস্ট্রেশন না থাকায় ২০১৯ সালে খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল তাদের আবেদনপত্র। সেই জটিলতা কাটাতে দীর্ঘ সময় বেগ সময় বেগ পেতে হলো। রাজ্যের সরকারকেও জিআই এর জন্য বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়। সরপুরিয়া ও সরভাজা যে বাংলারই নিজস্ব মিষ্টি তার সঠিক প্রমাণও জোগাড় করতে হয় রাজ্য সরকারকে৷ 

সরভাজা ও সরপুরিয়াকে জিআই ট্যাগের জন্য ধাপে ধাপে নানান পরীক্ষাও দিতে হয়। সেই সমস্ত পরীক্ষাতেই সফল হয়েছে বাংলার এই জিভে জল আনা দুটো মিষ্টি। এবার কেবল অপেক্ষা আনুষ্ঠানিকভাবে জিআই তকমা পাওয়ার। আশা করা হচ্ছে পুজোর আগেই বাংলার মিষ্টিপ্রেমীদের জন্য এই সুখবর আসতে পারে৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলার জিআই পাওয়া মিষ্টির তালিকায় রসগোল্লা, বর্ধমানের সীতাভোগ ও মিহিদানা, জয়নগরের মোয়ার পর যুক্ত হতে চলেছে সরভাজা ও সরপুরিয়া। 

নদিয়ার মিষ্টি ব্যবসাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে সরপুরিয়া ও সরভাজা আনুষ্ঠানিক ভাবে জিআই তকমা পাওয়ার পর। নদিয়ার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের গুরুত্বও দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে৷ বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও বৃদ্ধি পাবে। বাংলা ও বাঙালির সাথে সরভাজা ও সরপুরিয়ার সম্পর্ক বহুদিনের। এই মিষ্টি জিআই ট্যাগ পেলে বাংলার ঐতিহ্যও অনেকটা সুদুরপ্রসারি হবে৷ 

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা


No comments