বিরল সম্মাননা, নচিকেতার নামে তৈরি হচ্ছে ৮০০ আসন বিশিষ্ট প্রেক্ষাগৃহ
সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর নামে গড়ে উঠছে প্রেক্ষাগৃহ। হাওড়ার আমতায় ৮০০ আসন বিশিষ্ট এক প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হচ্ছে নচিকেতার নামে। নিজের জীবদ্দশায় এমন বিরল সম্মাননা খুব কম শিল্পীই পেয়েছেন। এই প্রেক্ষাগৃহের নামকরণ করা হচ্ছে 'নচিকেতা মঞ্চ'। নচিকেতা চক্রবর্তী লক্ষ লক্ষ বাঙালি ছেলেমেয়েদের অনুপ্রেরণা তিনি৷ তাঁর কাছে এ এক বিরল সম্মাননা৷ তাঁর সঙ্গীতজীবনের প্রকৃত স্বার্থকতা এখানেই৷
দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয় নচিকেতা চক্রবর্তী। তাঁর গান যেমন প্রতিবাদের ভাষা ছড়ায় তেমনই অসহায় মায়েদের আঁচল ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয়। ব্যর্থ প্রেমের গল্প অথবা কলেজ প্রেম, বাস্তববাদী জীবন, রাজনীতি, দর্শন, সামাজিক প্রেক্ষাপট যে-কোনো বিষয়কেই পাখির চোখ করে তিনি জলের মতো সহজেই গান গেয়ে ফেলেন। তিনি যে নিছকই শিল্পী তা কিন্তু নয় তিনি এক আগুনপাখি। যার পালক বর্তমান সভ্যতার প্রতিচ্ছবি আঁকে।
তাঁর সৃষ্টি করা নীলাঞ্জনা, যখন সময় থমকে দাঁড়ায়, পৃথিবী আবার শান্ত হবে, বৃদ্ধাশ্রম, একদিন স্বপ্নের দিন, তুমি আসবে বলে, এই বেশ ভালো আছি, নিলামে উঠছে দেশ, অনির্বাণ, একলা চলতে হয়, উল্টো রাজার দেশে, রাজশ্রী প্রভৃতি গানগুলো বাঙালির এক একটা সম্পদে পরিণত হয়েছে। এই গানগুলো যেন এক একটা মাস্টারপিস। বাংলা গানে আমরা পরিবর্তনের যে কথা বলি তা নচিকেতা চক্রবর্তীর মতো কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পীদের হাত ধরেই এসেছে।
১৯৯০ সালে তাঁর সঙ্গীত জীবনের হাতে খড়ি। অল্প সময়েই গান বেঁধে কোটি কোটি বাঙালির মনের মণিকোঠায় তিনি জায়গা করে নেন৷ তিরিশ বছরে দশ হাজারের কাছাকাছি স্টেজ শো এবং আটশোরও বেশি গান রেকর্ডিং করেছেন তিনি৷ বাংলা মৌলিক গানের জগতে তিনি আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসেন। তিনি সর্বদা স্রোতের বিপরীতে হাঁটতেই বেশি পছন্দ করেন। এ যুগে দাঁড়িয়েও তিনি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন না। 'ক্যাবলা' ফোনেই সেরে নেন ফোন করা ও ম্যাসেজিং-এর কাজ৷
সম্প্রতি তিনি 'বিপজ্জনক হারমোনিয়াম' নামে নিজের আত্মজীবনী লেখার কাজও আরম্ভ করেছেন৷ ২০১৯ সালে হাওড়াতে নচিকেতার নামে সাত দিনব্যাপী একটি মেলা আয়োজিত হয়েছিল। গত ১৪ ই আগস্ট হাওড়ার আমতায় একটি বেসরকারি নার্সিং ও ফার্মাকোলজি কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। সেখানেই কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে ঐ কলেজে নচিকেতার নামে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হবে। নচিকেতার মতে, "লজ্জা লাগছে। আবার আনন্দও হচ্ছে। আমার অনুষ্ঠান দিয়ে প্রেক্ষাগৃহের যাত্রা শুরু হলে আমার আরো ভালো লাগবে৷"
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment