Header Ads

বরুণ বিশ্বাসের জাস্টিসের অপেক্ষায় দিন গুণছেন সুটিয়ার মানুষ


২০১২ সালের ৫ ই জুলাই  রাতের বেলায় গোবরডাঙা স্টেশন চত্বরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল বাংলার মহান আদর্শ শিক্ষক তথা সমাজসেবী বরুণ বিশ্বাসকে। বুলেটের আঘাতে বরুণ বিশ্বাসের বুক থেকে ঝরা রক্তে ভেসে গিয়েছিল গোটা স্টেশন। তাঁর নিথর দেহ প্রায় আধঘন্টা পড়ে রয়েছিল স্টেশনের সামনে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বিলম্ব হওয়ায় নিভে যায় তাঁর জীবনদীপ। রক্তেভেজা সেই দুঃখময় রাত আজও ভোলেননি সুটিয়ার মানুষ। 


বরুণ বিশ্বাসের মৃতদেহ ছুঁয়ে গ্রামবাসীরা সেদিন শপথ নেয় বরুণ বিশ্বাসের হত্যার প্রতিশোধ না নেওয়া পর্যন্ত তাঁরা থামবেন না। সেই প্রতিশোধের আগুন এখনও দাউদাউ করে জ্বলছে। আমাদের একটাই সংশয় যে দীর্ঘ নয় বছর পরও বিচার হয়নি বরুণ বিশ্বাসের হত্যাকারীদের। কোর্ট নয় বছর ধরে ঝুলিয়ে রেখেছে বরুণ বিশ্বাসের কেশটা৷ খুনীদের দোষী সাব্যস্ত করে জেল হলেও সিআইডি আজও চার্জসিট দিতে পারেনি যে কার নির্দেশ ও অর্থে বরুণ বিশ্বাস খুন হয়েছেন। বরুণ বিশ্বাস বিচার ব্যবস্থার আড়ালেই থেকে গেছেন। সুটিয়াবাসী বরুণ বিশ্বাসের জাস্টিসের প্রতীক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন।

গত সোমবার ছিল বরুণ বিশ্বাসের মৃত্যুদিন। সুটিয়ার মানুষ দ্রুত মামলার নিষ্পত্তির দাবি তুলেছেন। এ দিন সুটিয়া প্রতিবাদী মঞ্চের পক্ষ থেকে বরুণ বিশ্বাসের বাড়ির কাছে আয়োজন করা হয়েছিল এক স্মরণসভার। প্রায় দেড়শো জনের মতো মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। এই সভা থেকে দাবি তোলা হয়, বরুণ বিশ্বাসের খুনের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক। 

বরুণ বিশ্বাসকে হত্যা করার কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্য পুলিশ ও জিআরপি গ্রেফতার  করেছিল ৬ জন আসামিকে। পরবর্তীকালে সিআইডিও তদন্তের ভার গ্রহণ করেছিল৷ সুটিয়া গণধর্ষণ মামলায় আগেই ধরা পড়েছিল সুশান্ত চৌধুরী। জানা গেছে, দমদম সেন্ট্রাল জেলে বসে খুনের ছক কষেছিল সে-ই। সুশান্ত-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলায় চার্জশিট জমা হয় বনগাঁ আদালতে। পরে জেলেই মারা যায় সুশান্ত। মামলা এখনও ঐ বনগাঁ আদালতেই বিচারাধীন। তবে এক নাবালক অপরাধীর সাজা হয় জুভেনাইল আদালতে। দু'জন এখনও ফেরার পুলিশের খাতায়। কিন্তু খুনের মূল ষড়যন্ত্রকারীরা অধরা বলে দাবি প্রতিবাদী মঞ্চের। যারা জেলে বন্দি তাদেরও সবার সাজা ঘোষণা হয়নি এখনও পর্যন্ত।  

বরুণ বিশ্বাসের পরিবারের সদস্যরা নয় বছর ধরে বরুণের বিচারের জন্য লড়াই করছেন। তাঁরা সকলেই নিয়মিত কোর্টেও যাতায়াত করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তাঁরা প্রায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন বাড়ির ছেলের বিচার চাইতে গিয়ে। তারা কেউ-ই জানেন না আদৌ বরুণ সঠিক বিচার পাবে কিনা৷ বরুণের মামলাটি ফাস্ট ট্র্যাক-১ আদালতে চলছে। আদালতে দীর্ঘদিন যাবৎ কোনো স্থায়ী বিচারক ছিলেন না। করোনা পরিস্থিতির জন্য শুনানির কাজ ধীরগতিতে এগোচ্ছে। বর্তমানে স্থায়ী বিচারক এসেছেন। আগামী ৩ রা আগস্ট পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। ঐ দিন বরুণের বাবার সাক্ষ্য নেওয়া হবে। 

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা


No comments