বাঘ ও কুমিরের আক্রমণে স্বজন হারানোর পরিবারের পাশে 'সুখের চাদর'
সম্প্রতি ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাঘ ও কুমিরের আক্রমণে স্বজন হারানো ৫ টি পরিবার ও সুন্দরবনের আরো ২৩ টি সম্বল হারানো পরিবারগুলিকে বিশেষ ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করলো 'সুখের চাদর'। তাদের পুনর্বাসন প্রকল্পে তাদের হাতে এই সংগঠনটি তুলে দিল হাড়ি, কড়া, মশারী সহ ২৭ টি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ও পাশাপাশি বিশেষ আর্থিক সহায়তা।
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গোসাবা ব্লকের ৬ টি দ্বীপ থেকে এদিন ঐ সকল মানুষগুলোকে তারা নিয়ে আসেন বালি দ্বীপে তাদের নিজস্ব ভাড়া করা স্টিমারে এবং আবার তাদের দায়িত্ব নিয়ে সন্ধ্যের আগে পৌঁছেও দেন নিজ গৃহে। শুধু তাই নয়, আগত অতিথিরা ভোর রাতে বেরিয়ে দীর্ঘ ৪ থেকে ৫ ঘন্টা স্টিমারে যাত্রা করে আসবেন জেনে তাদের পরিবারগুলোর প্রতিনিধিদের জন্য দুপুরের আহারের ব্যবস্থাও করেন তাদের সহযোগী আরও একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন 'সভ্যতার ফুল'। এ কঠিন পরিস্থিতিতে এই বিশেষ ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা পেয়ে স্বভাবতই খুশি ঐ অসহায় পরিবারগুলি।
'সুখের চাদর' কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২০১৬ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর ফেসবুকে পরিচয় হওয়া কয়েকজন বন্ধু মিলে তৈরি করেন এই সংগঠনটি। যারা সারা বছর ধরে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা নবম শ্রেণীর উর্দ্ধে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিক ভাবে সহায়তা প্রদানের জন্য 'শিক্ষাজ্যোতি' নামে একটি প্রকল্প পরিচালনা করেন। অসহায়-অবলা মানুষদের আর্থিক ও নানাভাবে ভাবে সাহায্যের জন্য 'আস্থাজ্যোতি' নামে তাঁরা একটি প্রকল্প পরিচালনা করেন। এছাড়াও অসহায় আর্তপীড়িত মানুষদের চিকিৎসার জন্য 'আরোগ্যজ্যোতি' নামে একটি প্রকল্প পরিচালনা করেন তাঁরা।
সংগঠনের পক্ষে সভাপতি রুপালি মজুমদার বলেন "গত বছর আমফান পরবর্তী পরিস্থিতিতে আমরা সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে পর্যায়ক্রমে আমাদের সাধ্যমতো ত্রাণ সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর কাছে পৌঁছে দিয়েছি। যা অধিকাংশ সংস্থা এবারো করছে। কিন্তু ক্ষতিগ্ৰস্ত অসহায় মানুষগুলো ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছে ঠিকই কিন্ত সেগুলো যে পাত্রে রন্ধন করে খাবে সেই পাত্রগুলোও তো তাদের বন্যার জলে ভেসে গেছে। সেখান থেকেই আমাদের এই ব্যতিক্রমী ভাবনা।"
সংগঠনের সম্পাদক সন্দীপ কুমার দাস বলেন "এবার আমরা প্রথম থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমরা কম সংখ্যক পরিবারকে সহায়তা প্রদান করবো কিন্তু তা হবে বিশেষ সহায়তা। শুধু তাই নয় আমরা যে পরিবারগুলির সহায়তা প্রদান করবো তারা যেন সত্যিই দুঃস্থ হয় এটাও মাথায় রেখেছিলাম। আর এই দ্বীপ অঞ্চলগুলি থেকে সেই পরিবার গুলিকে সংগ্ৰহের দায়িত্ব দিয়েছিলাম আমাদের সদস্য সুন্দরবনের অক্সিজেন ম্যান সৌমিত্র মণ্ডল এর ওপর। যা সে যথাযথ ভাবে পালন করেছে বলে আমি মনে করি।"
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment