Header Ads

আন্তর্জাতিক ম্যানগ্রোভ দিবসে ১০,০০০ ম্যানগ্রোভ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিলেন উমাশঙ্কর মণ্ডল


আগামী ২৬ শে জুলাই আন্তর্জাতিক ম্যানগ্রোভ দিবস। ইকুয়েডরে ম্যানগ্রোভ কেটে চিংড়ি চাষ করার প্রতিবাদে ১৯৯৮ সালের ২৬ শে জুলাই একটি মহাসমাবেশ আয়োজিত হয়। যেখানে একজন অংশগ্রহণকারীর মৃত্যু হয়। সেই থেকে তাঁর স্মরণে এ দিনটি আন্তর্জাতিক ম্যানগ্রোভ দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছে।   


এবছর আন্তর্জাতিক ম্যানগ্রোভ দিবসে দশ হাজার ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানোর এক গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলার 'ম্যানগ্রোভ ম্যান' উমাশঙ্কর মণ্ডল। জানা যাচ্ছে এখনো পর্যন্ত ৪০০০ ম্যানগ্রোভ গাছের অনুদান তাঁদের কাছে এসেছে। এখনো বাকি আছে ৬০০০। তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে জানিয়েছেন যারা সুন্দরবনকে ভালোবাসেন তাঁরা যেন অন্তত ১০০ টি ম্যানগ্রোভের চারা দিয়ে তাঁকে সাহায্য করেন।

গোসাবার সাতজেলিয়া দ্বীপের চরঘেরির বাসিন্দা উমাশঙ্কর মণ্ডল। তিনি আয়লার পর চরঘেরির আশেপাশে বাইন, গরান প্রভৃতি ম্যানগ্রোভের চারা লাগানোর কাজ শুরু করেন। নদীতে অনেক ম্যানগ্রোভের বীজ ভেসে আসে৷ গ্রামের মহিলাদের কাছ থেকে তিনি সেটা সংগ্রহ করেন। তারপর তিনি সেগুলো নদীর পাশে পুঁতে দেন। তা থেকেই ম্যানগ্রোভের চারা তৈরি হয়৷ এভাবে গত ১০ বছরে সাড়ে ছ'লক্ষ ম্যানগ্রোভ চারা তৈরি করেছেন তিনি। 

উমাশঙ্কর মন্ডল ও তাঁর গ্রামের মহিলারা সাতজেলিয়া দ্বীপের গাড়াল নদীর পাশে পরশমনি নামক স্থানে প্রচুর ম্যানগ্রোভ রোপণ করছেন। এখানকার মহিলারা দীর্ঘদিন  ম্যানগ্রোভ রোপণের কাজের সাথে যুক্ত। তিনি ম্যানগ্রোভ রোপণে মানুষকে নানান ভাবে উৎসাহিতও করছেন।  

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে সুন্দরবনকে বাঁচাতে এই ম্যানগ্রোভের বড় ভূমিকা রয়েছে। সুন্দরবনে ২৮ টি প্রজাতির ম্যানগ্রোভ গোটা বনাঞ্চল ঘিরে রেখেছে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখেছে। সেই সঙ্গে বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা ঝঞ্ঝার সামনে উঁচু প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায় সুন্দরবনের এই ম্যানগ্রোভ অরণ্য। 

উমাশঙ্কর মণ্ডল আন্তর্জাতিক ম্যানগ্রোভ দিবসে যে উদ্যোগটি নিচ্ছেন তা বেশ প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এ উদ্যোগ সফল হলে তা সুন্দরবনের জন্য যথেষ্ট উপকারে লাগবে। সুন্দরবনকে বাঁচাতে হলে ম্যানগ্রোভ রোপণই যে মূল উপায়। ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য প্রাকৃতিক সুরক্ষা প্রাচীর হিসেবে কাজ করে থাকে৷ অতএব সুন্দরবন বাঁচাতে ম্যানগ্রোভের বিকল্প আর কিছুই নেই। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments