বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী বর্ণ চক্রবর্তীর জীবনাবসান
'বৃষ্টি তুমি বৃষ্টি', 'কিছু বৃষ্টি বড় একা', 'ক্ষমা', 'ওরে মন', 'ভালোবাসা ভালোবাসা', 'বোকা পাখি', 'ও বন্ধুরে', 'চলো পালিয়ে যাই', 'ভাগ্যিস', 'ভুলিনি', 'এভাবেই', 'তুমিহীনা'র মতো অসংখ্য গানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল গীতি, লালন গীতি ও হাসন রাজার গানও গেয়েছেন তিনি। তাঁর সুরেলা কণ্ঠে যেন ম্যাজিক আছে। তিনি প্রাণখুলে এক একটা গান গাইতেন। লোকে তাঁর গান শুনতে বেশ পছন্দ করতেন। তিনি হলেন বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী বর্ণ চক্রবর্তী।
তারিখটা ২০২১ এর ২৮ শে জুন, বর্ণ চক্রবর্তীর সুর ও কণ্ঠে ইউটিউবে মুক্তি পায় 'মনটা ভীষণ খারাপ'। এটাই ছিল তাঁর শেষ গান। তারপর করোনার গ্রাসে সব শেষ। গত ১৭ ই জুলাই রাত ১০ টা ৪১ মিনিটে অকালে জীবনদীপ নিভে গেল বর্ণ চক্রবর্তীর। করোনার মৃত্যুমিছিল যেন আর থামতে চাইছে না। একের পর এক নক্ষত্রকে কেড়ে নিচ্ছে মারণঘাতী করোনা। আমরা জানিনা কেউই যে এই অকাল মৃত্যুমিছিলের শেষ কবে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৩৫ বছর।
তরুণ সঙ্গীতশিল্পী বর্ণ চক্রবর্তীর অকাল প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দুই বাংলার সঙ্গীতজগতে। কেউ-ই মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না যে তিনি নেই। সোশ্যাল মিডিয়াতে বহু শিল্পীই শোকপ্রকাশ করেছেন পোস্টের মাধ্যমে। এতো তাড়াতাড়ি তিনি চলে যাবেন ভাবতে পারেননি কেউ-ই। সঙ্গীতে অসাধারণ প্রতিভা ছিল তাঁর মধ্যে।
২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত নির্মাণ করেছেন অসংখ্য মিউজিক ভিডিও, নাটক, বিজ্ঞাপন ও প্রামাণ্যচিত্র। চলতি বছরের এপ্রিলে প্রকাশিত হয়েছে বর্ণ চক্রবর্তীর প্রথম একক অ্যালবাম 'বোকা পাখি'। অ্যালবামের সবকটি গানের কথা, সুর ও সংগীতায়োজন তিনি করেছেন।
সঙ্গীতশিল্পী বর্ণ চক্রবর্তীকে ৭ দিনেরও বেশি সময় ধরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল৷ লাইফ সাপোর্টে থাকলেও তাঁর অক্সিজেন স্যাচুরেশন কম ছিল। পরে ইনজেকশন দিয়েও তা স্বাভাবিক করা যায়নি। অবশেষে ১৭ ই জুলাই ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি৷
ছোটোবেলা থেকেই গানের সাথে বেড়ে ওঠা তাঁর। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া তিনি শুরু করেন চারুকলায়। গান, পড়াশুনা সবেতেই সফল ছিলেন তিনি। কিন্তু জীবনের অজস্র স্বপ্ন পূরণ হলো না তাঁর। স্তব্ধ হলো তাঁর কণ্ঠ, থেমে গেল সুর। তিনি এখন চিরঘুমে আছন্ন। তাঁর কাজের মধ্য দিয়েই তিনি বেঁচে থাকবেন গানপাগল বাঙালির মধ্যে।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment