এবার একটি আস্ত চায়ের দোকানই খুলে বসলেন 'চা কাকু'
"আমরা কি চা খাব না, খাব না আমরা চা?" বাক্যটি সকলের চেনা একটি বাক্য। এই মাত্র একটি বাক্যই ভাইরাল হয়ে জীবন বদলে দিয়েছে মৃদুল দেব ওরফে 'চা কাকু'র। রাজমিস্ত্রীর কাজ দিয়ে কর্মজীবন শুরু হয়েছিল তার। নিদারুণ কষ্টের সাথেই সংসার চলছিল তার। ২০২০ সালে লকডাউন শুরু হওয়ার প্রথম দিনে চা খেতে বেরোন তিনি। তারপর সেখানে এক ভদ্র মহিলা তাকে জানতে চেয়েছিলেন যে কেন তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। তার উত্তরে তিনি সেই ভাইরাল হওয়া বাক্যটি বলেন৷
লকডাউনে তিনি কর্মহীন হয়ে পড়েন। ছেলের পড়াশোনার খরচ আর খাওয়া-দাওয়া থেকে যাবতীয় সংসারের খরচ টানতে বেজায় কষ্ট হচ্ছিল তার। বহু মানুষ তার খোঁজ নিতে বাড়িতে এলে তার প্রবল অর্থাভাবের চিত্রটি আরো পরিস্কার হয়ে যায়। বহু মানুষ তাকে সাহায্য করতে থাকে নানাভাবে। অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী তার সারা জীবনের দায়িত্ব নিয়েছেন, এমনকি তার নিয়মিত খোঁজখবরও রাখেন। শুধু তিনিই নন, আরো অনেক লোকজন তার খোঁজখবর রাখেন নিয়মিত।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ উপচে পড়ার সময় কোভিড ভলেন্টিয়ার হিসেবে এক বিশেষ দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। করোনার নিয়ম ভঙ্গের জন্য যে মানুষটিকে অবজ্ঞা করা হয়েছিল তিনিই আবার কোভিড মুক্তি সংগ্রামী হয়ে করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ান। সব মিলিয়ে বেশ আরামে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। যত দিন যাচ্ছে চা কাকুর ইনিংস তত বাড়ছে৷
আমাদের সবার প্রিয় সেই 'চা কাকু' মৃদুল দেব নিজেই এবার খুলে বসেছেন আস্ত একটি চায়ের দোকান। যে দোকানের তিনি নাম রেখেছেন 'চা কাকুর দোকান'। লোকে তার দোকানে চায়ে চুমুক দিতে দিনভর ভিড় জমাচ্ছেন। এই দোকানটির ঠিকানা হলো ১১/৫/সি, বিজয়গড়, কলকাতা ৭০০০৩২। যে চা কাকুকে একসময় চা খেতে চায়ের দোকানে যেতে হতো, তিনিই এখন লোকেদের চা বানিয়ে খাওয়াচ্ছেন। আমাদের 'চা কাকু' এভাবেই নিজের জীবনটাকে বর্ণময় করে তুলুক।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment