Header Ads

পান্তা ভাত-আলু ভর্তা দিয়েই মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ফাইনালে বাজিমাৎ বঙ্গতনয়ার


স্বাদে ও গন্ধে বাঙালি রান্নার কোনো তুলনা হয়না। বাঙালি খাবারের খ্যাতি ছড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়ে। বাংলার নিজস্ব খাবার নানাভাবে স্থান করে নেয় বিশ্বজুড়ে। আমরা সকলেই জানি বিপ্লবী রাসবিহারী বসু ভাতের সাথে মুরগির মাংসকে জাপানে প্রচলন করেছিলেন। বর্তমানে  কলকাতা কাঠি রোলকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় করে তুলেছেন বঙ্গতনয়া পায়েল সাহা৷ সেকালের বাঙালি হোক কিংবা একালের বাঙালি বাংলার জনপ্রিয় পদকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে বেশ ওস্তাদ। 


সম্প্রতি বাঙালি রান্নার খ্যাতিতে নতুন পালক জুড়ে দিলেন বাঙালি মহিলা কিশোয়ার চৌধুরী। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় রান্নার রিয়্যালিটি শো 'মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া'র ফাইনালে তিনি পান্তা ভাত ও আলু ভর্তা বানিয়ে বিচারকদের মন জয় করে নিয়েছেন। তিনি নিজে এই পদের নাম দিলেন 'স্মোকড রাইস ওয়াটার ও আলু ভর্তা।' বিচারকরা ভাবতেও পারেননি যে জল দিয়েও এরকম অসামান্য পদ হতে পারে। 

গরমের দিনে বাঙালির প্রথম পছন্দের খাবার হলো পান্তা ভাত ও আলু ভর্তা। থালার ওপর পান্তা ভাত সাথে আলু ভর্তা, পেঁয়াজ ও কাঁচালঙ্কা দিয়ে পরিবেশন করার মজাই আলাদা। এই পদটি গরমে বাঙালির দেহে যেন শক্তি জোগায়। মন ও দেহ দুই-ই চাঙ্গা হয়ে ওঠে৷ এবার এই পদ বানিয়েই মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ফাইনালে বিচারকদের চমকে দিলেন তিনি৷ এতো বড়ো রান্নার প্রতিযোগিতায় পান্তা ভাত ও আলু ভর্তা দিয়েই বাজিমাৎ করলেন তিনি৷ 

দুই বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো পান্তা ভাত। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকল বাঙালির কাছে পান্তা ভাত রাজকীয় খাবার৷ ব্যাপারটি জানলে অনেকে হেসে উড়িয়েও দিতে পারেন, আবার নাকও সিঁটকাতে পারেন কিন্তু AIIMS পান্তাভাতের প্রশংসাতেই পঞ্চমুখ হয়ে উঠেছে। তাঁদের গবেষণা বলছে যে পান্তা ভাত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দারুণ কার্যকর।  

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার চলতি সিজনে প্রথম থেকেই চমক রেখে চলেছেন বঙ্গতনয়া কিশোয়ার চৌধুরী। নতুন নতুন বাঙালি রান্নায় তিনি নিমেষেই জয় করে নিয়েছেন বিচারকদের মন। কখনো খিচুড়ি-মাছ ভাজা, কখনো পান্তা ভাত-আলু ভর্তা, আবার কখনো বাঙালির নিত্যদিনের পেঁয়াজ-টমেটো দিয়ে মাছের পাতলা ঝোল বানিয়ে খাইয়েছেন তিনি৷ নিজের বুদ্ধি ও সুন্দর আইডিয়াকে কাজে লাগিয়ে সফল হলেন তিনি৷ 

৩৮ বছর বয়সী কিশোয়ার চৌধুরী বাংলাদেশের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে কর্মসূত্রে থাকেন অস্ট্রেলিয়াতে। এরপর কিছুদিন জার্মানিতে কাটিয়ে বাংলাদেশে ফিরে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে ৬ বছর কাটিয়ে ২০১৫ সালে ফিরে যান অস্ট্রেলিয়াতে। হাইস্কুলের প্রেমিক এহতেশামকে বিয়ে করেন তিনি৷ তাঁদের ১১ বছরের ছেলে মাকায়েল এবং ৪ বছরের মেয়ে সেরাফিনকে নিয়ে সুখের সংসার।   মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া ২০২১ -এর অন্যতম প্রতিভাবান প্রতিযোগী তিনি৷ কিশোয়ার চৌধুরী আগামীদিনে বাঙালি রান্নার রেসিপি নিয়ে বইও লিখতে চান৷ 

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা


No comments