Header Ads

জার্মানিতে সম্মানিত হলো বাঙালি পরিচালকের তথ্যচিত্র


মহারাষ্ট্রের এক হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসকে তথ্যচিত্রে বেঁধেছেন যুধাজিৎ বসু। যে তথ্যচিত্রটির নাম 'কালসুবাই'। ২০ মিনিটের এই তথ্যচিত্র অন্যান্য তথ্যচিত্রের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা৷ তিনি চেনা ছক ভেঙ্গে তৈরি করেছেন এই তথ্যচিত্র। পুনের এফিটিআইআই -এর শেষ বর্ষের ছাত্র যুধাজিৎ বসু৷ তাঁর তৃতীয় বর্ষের পাঠক্রমের একটি প্রজেক্ট হিসেবে গত বছর তিনি এই তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন। 


সম্প্রতি যুধাজিৎ বসুর তৈরি তথ্যচিত্র 'কালসুবাই' জার্মানির ওবারহাউসেন ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সম্মানিত হলো সেরার সম্মানে। তিনি জিতে নিলেন 'গ্র্যান্ড প্রাইজ অফ দ্য সিটি অফ ওবারহাউসেন' পুরস্কার।  

পশ্চিমঘাট রেঞ্জে অবস্থিত কালসুবাই হলো মহারাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। যাকে মহারাষ্ট্রের এভারেস্টও বলা হয়। কালসুবাই কেবল শৃঙ্গই নয়, মারাঠিদের পূজিত এক দেবী। কালসুবাইতে বসবাসকারী এক উপজাতির আরাধ্য দেবী কীভাবে ধীরে ধীরে মারাঠিদেরও দেবী হয়ে উঠলো সেই বিবরণও যেমন তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে তেমনই কালসুবাই শৃঙ্গে বসবাসকারী উপজাতিদের ইতিহাস ও তাদের প্রচলিত লোককথাও তুলে ধরা হয়েছে। 

যুধাজিৎ বসু তাঁর এক পরামর্শদাতার সঙ্গে একটি চলচ্চিত্র গবেষণার জন্য কালসুবাই ভ্রমণ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়েই তিনি তথ্যচিত্রটি তৈরি করার অনুপ্রেরণা পান। তিনি বলেন, "আমি কালসুবাইয়ের স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলছিলাম এবং তাঁদের সংস্কৃতিটি বোঝার চেষ্টা করছিলাম কারণ আমি একটি ভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমিতে জন্মেছি। আমি কলকাতার ছেলে। ভাষা এবং সংস্কৃতি উভয় ক্ষেত্রেই আমার জন্য কালসুবাই এক নতুন জায়গা ছিল। আমার মনে আছে আমি যখন আমার অন্য ব্যাচমেটদের সাথে একদিন বিকেলে একটি চা স্টলে বসে ছিলাম, তখন একজন ব্যক্তি আমাকে সেখানকার স্থানীয় উপজাতি দেবীর গল্প শুনিয়েছিলেন। যে ঐ দেবী জঙ্গলের মধ্য দিয়ে একা একা চলতেন এবং নিজেই একটি পাহাড়ে বাস করতে শুরু করেছিলেন।"

কেন এই তথ্যচিত্র সবার থেকে আলাদা? আমরা সাধারণ তথ্যচিত্রে দেখে থাকি যে কোনো আঞ্চলিক লোককথা ও সেই অঞ্চলের জীবনযাত্রা নিয়ে যে তথ্যচিত্রগুলো তৈরি হয় তাতে কেবল স্থানীয় লোকদের সাক্ষাৎকারকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখানো হয়। কিন্তু এই তথ্যচিত্রে একের পর এক স্থিরচিত্র সাজিয়েই পুরো তথ্যচিত্রটি তৈরি হয়েছে। 

'গ্র্যান্ড প্রাইজ অফ দ্য সিটি অফ ওবারহাউসেন' পুরস্কারে যুধাজিৎ বসু সম্মানিত হওয়ার আগে তাঁর এই তথ্যচিত্রটি সুইজারল্যান্ডের এক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল। পুরস্কার জয়ের প্রসঙ্গে যুধাজিৎ বসু জানান, "এই পুরস্কার অন্য যে কোনও কিছুর চেয়ে স্বস্তির মতো। আমি আশা করি এই মহামারীটি শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে। মহামারী কেটে যাওয়ার  পর ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন জায়গাতে প্রদর্শিত হবে 'কালসুবাই', যাতে তথ্যচিত্রটি বৃহত্তর সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারে।"

প্রতিবেদন- সুমিত দে

 

No comments