Header Ads

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর সালকিয়ার ঐতিহাসিক জনসভা সম্পর্কে কিছু কথা


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, ব্রিটিশ ভারতের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড লিনলিথগো কংগ্রেস নেতৃত্বের সাথে আলোচনা না করেই ভারতের পক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। সুভাষচন্দ্র বসু এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করার জন্য গণ আইন অমান্য আন্দোলন আয়োজনের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন। কিন্তু মহাত্মা গান্ধীকে এর অপরিহার্যতা বোঝাতে তিনি ব্যর্থ হলে, তিনি কলকাতার অন্ধকূপ হত্যা ঘটনার স্মরণে, ডালহৌসি স্কোয়ারের এক কোণে নির্মিত 'হলওয়েল মনুমেন্ট' অপসারণের দাবিতে গণ বিক্ষোভের আয়োজন করেন। এসময় তাকে গ্রেফতার করে কারারুদ্ধ করা হয়। ১৯৪০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর অবধি তাঁকে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি রাখা হয়। জেলে বন্দি থাকার সময় তিনি আমরণ অনশন শুরু করেন। ক্রমাগত অনশনের ফলে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন। যার ফলে তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় তাঁর এলগিন রোডের বাড়িতে নজরবন্দী করে রাখা হয়। 


১৯৪১ সালের ১৬ ই জানুয়ারি সুভাষ চন্দ্র বসু বাড়িতে নজরবন্দি অবস্থায় ব্রিটিশ পুলিশের চোখে ধূলো দিয়ে ভারত ত্যাগ করেন। তার আগে তিনি হাওড়ার সালকিয়াতে এক ঐতিহাসিক জনসভা করেছিলেন। যে জনসভার কথা হয়তো অনেকেই জানেন না। 

১৯৩৯ সালে সালকিয়ার জটাধারী হালদার পার্কে সুভাষচন্দ্র বসু ফরওয়ার্ড ব্লকের কার্যাবলী জণগণের মধ্যে প্রচার করতে এসেছিলেন। এলাকার অনেক প্রবীণের স্মৃতিতে আজও সেই দুর্লভ ঘটনা উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। তাদের মুখ থেকে শোনা কথা অনুযায়ী সুভাষের আসা যাওয়ার পথে সালকিয়ার জনগণ পুষ্পবৃষ্টি ও শঙ্খধ্বনি সহকারে অভ্যর্থনা জানায় এবং সেদিনের সেই সভায় 'বন্দেমাতরম' গেয়েছিলেন সালকিয়ার কবি ব্রজমোহন দাস। 

সালকিয়াতে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ডাকা ঐতিহাসিক জনসভাতে নেতাজীকে দেখতে ভিড় করেছিল অগণিত মানুষ।  সেদিনে সভা যেন এক প্রকাণ্ড জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। সালকিয়ার মাটিতে তিনি যে বক্তব্য রেখেছিলেন আজও প্রবীণদের কানে ভেসে ওঠে সেই বক্তব্য। এই জনসভার কিছুদিন পরেই গ্রেপ্তার হলেন নেতাজী। তাই সেদিনের জটাধারী পার্কে'র সভাটি আজও ঐতিহাসিক সভা বলে চিহ্নিত হয়ে আসছে- বিশেষ করে সালকিয়াবাসীর কাছে। 

সালকিয়ার জনসভাতে নেতাজী সেকেলের স্ট্যাটসম্যান কাগজের প্রসঙ্গ তুলে যে উক্তিটি তুলে ধরেন তা ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। তিনি বলেছিলেন- "স্টেটসম্যান যখন আমাদের দেবে, জানবেন আমরা ঠিক করছি। আর স্টেটসম্যান যখন আমাদের প্রশংসা করবে, জানবেন আমরা ভুল করছি।"

সুভাষচন্দ্র বসু সালকিয়ার জনসভাতে যে চেয়ারটিতে বসেছিলেন সেটি আজও সযত্নে সজ্জিত রয়েছে ডাঃ তুলসী দাস চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র বিমল কুমার চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে। 

তথ্যসূত্র- শালিখার টুকিটাকি, সববাংলায় পত্রিকা। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments