বিষ্ণুপুরে রিকশা নিয়ে করোনা সচেতনতার প্রচার করছেন বিষ্ণু বাউরি
করোনার মৃত্যুমিছিল দেখতে দেখতে সবাই প্রায় ক্লান্ত। কবে যে এই মৃত্যুমিছিল থামবে জানেন না কেউই। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ উপচে পড়ার পর সচেতনতার মাত্রা অনেকটা বৃদ্ধি পেলেও এখনও বিভিন্ন জায়গাতে কিছু অসচেতনতার চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে যেমন অনেকে ঠিকমতো মাস্ক পরছেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না। অসাবধানতা অবলম্বন করছেন। এই পরিস্থিতিতে মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিষ্ণু বাউরি নামের একজন দরিদ্র রিকশাচালক।
বিষ্ণু বাউরির বয়স ৬০ বছর। তার বাড়িতে অভাবের সংসার। তিনবেলা অনেক কষ্টে খাবার জোটাতে হয় তাকে। এতো বছর বয়সে এসেও তাকে ঘোরাতে হয় রিকশার প্যাডেল। যা এককথায় কঠিনসাধ্য ব্যাপার। লকডাউনে তার হাতে তেমন কাজ নেই। বাড়িতে একা একা বসেই দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু বাড়িতে বসে কিছুটা তিনি অস্বস্তি বোধ করছিলেন তাই রিকশা নিয়ে প্রতিদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ছেন করোনা সচেতনতার প্রচারে।
বৃদ্ধের এই অনাবিল আগ্রহ দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাঁকুড়ার এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা সচেতনতার বার্তা দেওয়া পোস্টারে মুড়ে দিয়েছে রিকশাটিকে। আমরা দেখতে পাচ্ছি করোনার পরিস্থিতি রাজ্য তথা গোটা দেশে ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। বহু চিকিৎসকদের মৃত্যু ঘটছে। বহু রোগীর মৃত্যু ঘটছে। অক্সিজেন, বেড ও ভ্যাক্সিন সবকিছুরই প্রচণ্ড সংকট চলছে। এমন সময়কালে বেঁচে থাকতে গেলে ঐ বৃদ্ধ রিকশাওয়ালার মতো করোনা যুদ্ধে নেমে পড়তে হবে সকলকে।
করোনা মোকাবিলায় বিষ্ণু বাউরির এই উদ্যোগ সমাজকে অনেক কিছু শেখায়। তিনি একজন নিম্নবিত্ত মানুষ, তার সামর্থ্য অনুযায়ী তিনি যে কাজটা করছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তার এই কাজ করোনা যুদ্ধে সকল যোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। এই অসম যুদ্ধে বিষ্ণু বাউরিও একজন করোনা যোদ্ধা।
বিষ্ণুপুর শহরের অধিকাংশ মানুষ তার দারুণভাবে প্রশংসা করছেন। শহরের অলিতে-গলিতে তাকে দেখা যাচ্ছে করোনার সচেতনতা প্রচারে। সকলে যাতে মাস্ক পরেন ঠিকভাবে, সকলে যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন সেই বার্তায় তিনি দিচ্ছেন।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment