করোনা মোকাবিলায় পুরুলিয়ার মুখ হয়ে উঠছেন অক্সিজেন ম্যান তুষার আওয়াস্তি
রাজ্যজুড়ে অক্সিজেনের প্রচণ্ড সংকট চলছে। বহু সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে বহু করোনা রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে কিছু মানুষ যেভাবে কাজ করছেন তা আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের বাঁচার আশা জাগাচ্ছে।
হাসপাতালের বেড থেকে অক্সিজেন বা ওষুধ, করোনা সংক্রান্ত প্রায় সব জিনিসই এখন সংকটের মুখে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ এখন খাদ্য সংকটেও পড়ছে। এই ভয়াবহ অবস্থাতে সরকারের পাশাপাশি এনজিও বা জনকল্যাণকর মানুষ বা সমাজসেবী এদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ডাক্তার থেকে অক্সিজেন, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটার এইসব মূল্যবান বস্তুকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সাহায্য করছেন পুরুলিয়ার তুষার আওয়াস্তি।
রাতদিন এক করে যেভাবে তুষারবাবু কাজ করছেন তাতে তিনি সমগ্র পুরুলিয়াবাসীর ভরসা হয়ে উঠেছেন। যে কারণে তিনি পুরুলিয়ার মানুষের কাছে 'অক্সিজেন ম্যান' নামে পরিচিত হয়ে পড়েছেন। ওনার পরিচালিত 'পাশে আছি পুরুলিয়া'র সকল সদস্যই পুরুলিয়া জেলার করোনা মোকাবিলায় আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন।
রোগীদের বাড়িতে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া বা অ্যাম্বুলেন্স বা খাদ্য সবকিছুরই তিনি যথাসাধ্য ব্যবস্থা করছেন। এই সময়ে দাঁড়িয়ে সমস্ত মেহনতী মানুষ কাজ করলেও কিছু অসাধু মানুষ সমাজ-সামাজিকতা বিসর্জন দিয়ে চিকিৎসায় ব্যবহৃত মূল্যবান বস্তুগুলোকে চড়াদামে বিক্রি করছেন, যার ফলে করোনা আক্রান্ত অসহায় মানুষদের লড়াইটা আরো কঠিন হয়ে পড়ছে।
তুষার আওয়াস্তি দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন এসব কালোবাজারি তিনি চলতে দেবেন না। শুধু কথা নয়, অন্যান্য জেলার তুলনায় কম দামে অক্সিমিটারের মতো দ্রব্যগুলির ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষকে। এই ভালো কাজ করার জন্য তার বিরুদ্ধে এফআইআর পর্যন্ত হয়েছে। এমনকি হুমকিও পেতে হচ্ছে তাকে। কিছু অসাধু মানুষ তুষারবাবুকে নোংরা ভাষাতে আক্রমণ পর্যন্তও করেছেন। এই অমানুষগুলোর সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে তুষারবাবুর লড়াই পুরুলিয়ার মানুষের বাঁচার লড়াইতে সাহায্য করছে।
কেবল করোনার দ্বিতীয় ঢেউই নয়, গত বছর যখন পুরুলিয়ার শ্রমিকরা বিভিন্ন জেলা ও ভিনরাজ্যে আটকে পড়েছিল তখন তুষারবাবুকে বারবার দেখা গিয়েছিল মাঝ রাত্রে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে তাদের খাবার এবং বাড়ি পৌঁছানোর জন্য ব্যবস্থা করে দিতে।
প্রতিবেদন- অমিত দে
Post a Comment