শহরকে সুস্থ করে তোলার প্রত্যয়, করোনা যুদ্ধে সামিল 'মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা'
কবিতাই তাঁদের সব। কবিতার সাথেই দিনরাত কাটে তাঁদের। কবিতা যেন তাঁদের কাছে অনেকটা 'খেলা মোদের গান গাওয়া ভাই, খেলা লাঙ্গল চষা'র মতো। জীবনের চাওয়া বা না চাওয়া, পাওয়া বা না পাওয়া সব বস্তুরই হিসেব লুকিয়ে থাকে কবিতার মাঝে। কবিতা সর্বদা সময় ও মানুষের কথাই বেশি করে বলে। বর্তমানে এ রাজ্যের প্রতিটি শহর অসুস্থ। সেই অসুস্থতাকে প্রতিরোধ করতে বহু সামাজিক সংগঠনের মতো তাঁরাও সামিল। তাঁরা 'মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা'।
মেদিনীপুর শহরের কবিতা পাগল একঝাঁক কবিরা উদ্যোগ নিয়েছেন মেদিনীপুর শহরকে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলার। এই তরুণ কবিদের উদ্যোগে সামিল হয়েছেন বিভিন্ন স্তরের ও বিভিন্ন বয়সের মানুষ। আর পাঁচটা প্রতিষ্ঠানের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা 'মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা'। তাঁরা নিষ্ঠার সাথে যত্ন সহকারে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওষুধ থেকে অক্সিজেন ও খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন সময়মতো। 'মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা' ও 'ওয়েস্ট মিডনাপুর সাইক্লার্স ক্লাব' গিটার হাতে গানে গানে তাঁরা ভরিয়ে তুলছে গোটা শহরকে।
কখনো কড়া রোদ ও কখনো দুর্যোগের রাত, এহেন ভ্রুকুটিকে উপেক্ষা করেও তাঁরা শহরকে সুস্থ করে তোলার অপারেশনে সামিল। ভরদুপুর হোক বা গভীর রাত একের পর এক কাজ করে চলেছেন তাঁরা। কেউ ওষুধের ব্যাপারটা সামলাচ্ছেন তো কেউ খাবার, আবার কেউ করোনা রোগীদের ওয়ার্ডে গিয়ে তুলে দিচ্ছেন তাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য। বিপদকালীন পরিস্থিতিতে পরিমিত রক্তের জোগান দেওয়ার কাজও তাঁরা করছেন।
'মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা' ও 'ওয়েস্ট মিডনাপুর সাইক্লার্স ক্লাব' গানে গানে শুভেচ্ছা প্রেরণ করছেন করোনা জয়ীদের। এমনকি যাঁরা করোনা প্রতিরোধের জন্য দারুণ ভাবে কাজ করছেন তাঁদেরও ভুলছেন না তাঁরা শুভেচ্ছা জানাতে। যেমন মেদিনীপুর পুরসভা দিন-রাত এক করে করোনা প্রতিরোধে যথেষ্ট ভালো কাজ করছে বলে কয়েকদিন আগে তাঁদের গানে-গানে শুভেচ্ছা জানিয়েছে 'মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা' সংগঠন ও 'ওয়েস্ট মিডনাপুর সাইক্লার্স ক্লাব'। যশের তাণ্ডবে পূর্ব মেদিনীপুরে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যে প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেইসব অঞ্চলে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ৯ টি সংগঠন একসাথে। এগিয়ে এসেছে 'মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা' -ও।
শুধু তাই নয়, জরুরি অবস্থায় রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনার কাজ, নিয়মিত আপদকালীন পরিস্থিতির তথ্য আপডেট করা, কোভিড ওয়ার্ডে বেডের অভাব হলে বেড জোগাড় করার ব্যবস্থা এবং দুঃস্থদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার কাজও করছে 'মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা'। তাঁদের বিশেষ প্রত্যয় এ শহর খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment