Header Ads

১৮৬৪ সালের ভয়াবহ সাইক্লোন ছারখার করে দিয়েছিল কলকাতা শহরকে


স্বাধীনতার প্রায় ৮৩ বছর আগে ইংরেজরা তখন রমরমিয়ে ভারতে বানিজ্য করছে। ১৮৬৪ সালের ৫ ই অক্টোবর কলকাতা সাক্ষী থেকে ছিল এক ভয়ঙ্কর সাইক্লোন এর। যার মৃত্যু সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০ হাজারের কাছাকাছি। ঘূর্ণিঝড় টি হুগলি নদী পার করে গঙ্গার দোয়াব অঞ্চলে গিয়ে পড়েছিল।


ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি হয়েছিল ২ রা অক্টোবর ১৮৬৪ সালে, এবং তা আছড়ে পড়েছিল ৫ ই অক্টোবর, ১৮৬৪ সালে। প্রযুক্তির উন্নতির অভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যেত না। হঠাৎই ভোররাত থেকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করে। মাঝে মাঝে অবশ্য একটু হাওয়ার পরিমাণ কমলেও বৃষ্টি চলছিল অব্যাহত। সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর তিনটে অব্দি চলেছিল তাণ্ডব ক্রমে ক্রমে ঘূর্ণিঝড় টি এত শক্তিশালী হচ্ছিল যে ল্যান্ডফল থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরের এলাকাও কবলিত হয়েছিল। শেষ এক ঘন্টা দক্ষিণ পশ্চিম দিক থেকে ধ্বংসাত্মক ঝড় সমুদ্রের জলের স্তর কে এতটাই বাড়িয়ে তুলেছিল যে তাতে গবাদিপশু আসবাবপত্র সব ভাসতে শুরু করে।

আচমকাই সাইক্লোন যেন এক মুহূর্তে ছারখার করে দিয়েছিল কলকাতা নগরীকে। জলের উচ্চতা পৌঁছেছিল প্রায় চল্লিশ ফুট উঁচু ল্যাম্পপোস্টের এর কাছাকাছি, তার সঙ্গে প্রবল বর্ষণ সব চেনা মানুষগুলোকে জলের তলায় তলিয়ে যেতে দেখেছে তার প্রিয় মানুষেরা, ভেঙেছে প্রচুর গাছ। অজস্র কাঁচা পাকা বাড়ি ভেসে গিয়েছে। বলা চলে পুরো কলকাতা নগরী সেদিন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছিল। সেই সময়কার 'খেজুরি' ছিল ইংরেজদের ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম ব্যস্ত বন্দর। সেই বন্দর এক লহমায় ধ্বংস হয়েছে, অগুনতি মালবাহী জাহাজ ভরাডুবি হয়েছে। এই সাইক্লোনের ফলে প্রায় ষাট হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন এবং তারা সবাই ডুবে মারা যান। কলকাতায় এই ঘূর্ণিঝড়ের আগে থেকেই চলছিল কলেরা, আমাশয়, গুটিবসন্তের প্রকোপ তার উপরেই সাইক্লোন পুরো ধ্বংস করে দিয়েছিল একটি শহরকে। প্রায় ৯৯,২০৬ টাকা ক্ষতিপূরণের জন্য ধার্য করা হয়েছিল। অনেক রিলিফ ফান্ড গড়ে উঠলেও সেগুলি ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিল ক্ষতির পরিমাণ এর কাছে। কলকাতাকে আবার নতুন করে মাথাচাড়া দিতে সময় লেগেছিল বেশ কয়েক বছর।

প্রতিবেদন- পৌলমী হালদার


No comments