সালকিয়াতে সহায় সম্বলহীন গরীব মানুষদের জন্য 'এক টাকার বাজার'
হাওড়ার সালকিয়ার শ্রী অরবিন্দ রোডে হরগঞ্জ বাজারের ঠিক উল্টোদিকেই বন্ধ হয়ে যাওয়া এক ওষুধের দোকানে চালু হয়েছে এক টাকার বাজার। যেখানে মাত্র এক টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ২ কেজি চাল, ৪০০ গ্রাম মুসুর ডাল, ২৫০ গ্রাম চিনি, এছাড়াও মশলা, মুড়ি, চা, গুঁড়ো দুধ, বিস্কুট। কী চমকে গেলেন তো? বিষয়টা শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও একদম সত্যি।
মনস্বিতা দেব, মধুশ্রী সাধুখাঁ ও তথাগত পাল এই তিনজনের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে 'এক টাকার বাজার'। যে বাজার খুলছে সোমবার থেকে বুধবার এবং শুক্রবার সকাল ৭ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত। দোকানে যতক্ষণ জিনিস উপলব্ধ থাকবে ততক্ষণ দেওয়া হবে খাবার জিনিস।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতে যেভাবে পশ্চিমবঙ্গে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তা প্রতিহত করতে এ রাজ্যে জারি হয়েছে লকডাউন। করোনা মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে লকডাউন ছাড়া দ্বিতীয় কোনো রাস্তা ছিল না। এই লকডাউনেও বহু শ্রমজীবি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বহু মানুষের ঠিকমতো খাবার জুটছে না। অনেকের কাছে বাজারের জন্যও পকেট প্রায় খালি। দিন আনি দিন খাই মানুষেরা প্রচণ্ড সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেই নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ।
'এক টাকার বাজার' সকলের জন্য নয়, এই বাজার কেবল দিন আনি দিন খাই মানুষদের জন্য। তাঁরা তাদের পরিচয় পত্র নিয়ে হাজির হচ্ছেন। সেই নাম নথিভুক্ত হয়ে যাচ্ছে এক টাকার বাজারের কর্তৃপক্ষের খাতায়। উক্ত ব্যক্তিকে দেওয়া হচ্ছে একটি কার্ড। সেই কার্ডের বিনিময়ে খাদ্য নিয়ে যাচ্ছেন সহায় সম্বলহীন গরীব মানুষরা।
উদ্যোক্তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের আর্থিক অবস্থা যাচাই করছেন৷ তার প্রেক্ষিতে প্রত্যেকের আধার নাম্বার-সহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে একটা তথ্যভাণ্ডারও তৈরি করেছেন তাঁরা।
বিনা পয়সায় না দিয়ে এক টাকার বাজার কেন? এই প্রসঙ্গে তথাগত পাল লিটারেসি প্যারাডাইসকে বলেন, "আমরা কোনো ভিক্ষুককে ভিক্ষা দিচ্ছি না। আমরা দিন আনি দিন খাই মানুষ যারা আগে কাজ করতেন কিন্তু লকডাউনে কাজ হারিয়ে নিদারুণ সমস্যায় পড়েছেন তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছি। দান গ্রহণে যাতে তাঁদের আত্মসম্মানে আঘাত না লাগে তাই বিনা পয়সায় নয়, এক টাকার বিনিময়েই দেওয়া হচ্ছে এই রেশন৷"
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment