Header Ads

মন্দার বাজারে যখন সুপারহিট বাংলার ছানার কেক


বাঙালির প্রিয় সুস্বাদু মিষ্টির মাঝেও কেক একটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। এই কেকের মধ্যে অন্যতম কেক হলো ছানার কেক। যা বাঙালির নিজস্ব সম্পদ। ছানার কেকের অতুলনীয় স্বাদ মুগ্ধ করে খাদ্যরসিকদের। মিষ্টির দোকানের শোকেশে সাজানো ছানার কেক দেখলে জিভের জল সামলানো বেশ কঠিন ব্যাপার। আর উৎসবের মরসুমে বিশেষ করে বড়দিনে তো ছানার কেক চাই-ই।


শোনা যায়, এই ছানার কেকের নাম আগে ছিল 'লাভ লেটার'। কাগজের মোড়কেই তখন তৈরি হতো এই কেক। যুগের সঙ্গে-সঙ্গে কাগজ বদলেছে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে, আর নাম বদলেছে 'ছানার কেক' এ। বাঙালি মূলত ছানার ব্যবহার শেখে পর্তুগিজদের কাছ থেকে। তার আগে বাঙালিরা গুড়ের পাক দিয়ে বেশিরভাগ মিষ্টি তৈরি করতো। তারপর থেকেই বাঙালিরা ছানা থেকে ভিন্ন রকমের মিষ্টি আবিষ্কার করতে থাকে। সেন্ট্রাল কলকাতার বো ব্যারাকের দোকানে এক সময় ছানার কেক মুড়িয়ে দেওয়া হতো। বো ব্যারাকের ছানার কেকে থাকে ছানা, ডিম, চিনি, কাজু,কিশমিশ ও মোরব্বা। এই কেক কিন্তু দীর্ঘজীবী নয়। এই কেকের আয়ু বড়জোর চার থেকে পাঁচদিন। 

করোনা সংক্রমণের আঘাতে বর্তমানে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে যে-কোনো ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রে। মন্দার বাজারে মিষ্টি ব্যবসার আয় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বহু সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব স্বাস্থ্যবিধির জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল৷ তাছাড়া ফিজিক্যাল ডিস্টেন্সিং ব্যাপারটার জন্যও মিষ্টির দোকানগুলোতে লোকেদের আনাগোনা কিছুটা হ্রাস পেয়েছিল। তবে পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক হলেও মিষ্টি ব্যবসায়ীরা মন্দা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অথচ মন্দার বাজারে বাঙালির ছানার কেক জমিয়ে ব্যবসা করছে। 

বলরাম মল্লিক, ফেলু মোদক ও নকুড় চন্দ্র এই তিনটে মিষ্টি দোকান ছানার কেক বিক্রিতে মহামারীতেও আশার আলো জাগিয়েছে। ২০২০ সালের দেওয়ালে মিষ্টির পিঠ ঠেকে যাওয়ার বছরে ছানার কেক যে সাড়া জাগাতে পারে জানা ছিলনা কলকাতার এই তিনটি বিখ্যাত মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠানের। ফেলু মোদক ডিমযুক্ত ছানার কেকে ২০২০ সালে দারুণ উৎকর্ষতা অর্জন করেছে। আর ডিমবিহীন কেকে অধিক লাভের মুখ দেখেছে বলরাম মল্লিক। ইডেনে কেকেআরের জয় উদযাপনে নকুড় চন্দ্র ও বলরাম মল্লিকের ছানার কেকের অর্ডার আসে। 

ছানার কেক আসলে একপ্রকার সন্দেশ, কেকের মতো দেখতে হয় বলে একে ছানার কেক বলা হয়। ২০২০ সালের মিষ্টির অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে বাঙালি হাতিয়ার করেছিল ছানার কেককে। ছানার কেকের পাশাপাশি পিছিয়ে ছিলনা ব্যান্ডেল চিজও। এখন তো সসম্মানে দেশের বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলে সমাদৃত হচ্ছে ব্যান্ডেল চিজ। সবশেষে এটাই বলবো, যে-কোনো জটিল অবস্থায় বাঙালির আসুক না কেন বাঙালির মিষ্টির জয় হবেই হবে। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments